ছুলাছা (মঙ্গলবার), ১৯ মার্চ ২০২৪

সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পালনের দাবি

সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পালনের দাবি

স্টাফ রিপোর্টার : পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার খিদমতে আমৃত্যু থাকার অঙ্গীকার করেছে আওয়ামী ওলামা লীগ। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বে জননেত্রী শেখ হাসিনা ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন। ইনশাআল্লাহ। শেখ হাসিনার বিকল্প অন্য কাউকে মেনে নিবে না ওলামা লীগ। আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে ওলামা লীগসহ সমমনা ১৩টি দল এসব কথা বলে।
বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যতদিন জীবিত আছেন ততদিন ওলামা লীগ জীবিত থাকবো।

ওলামা লীগ সব সময় সুদুরপ্রসারী ও সত্য এবং সঠিক পরামর্শ দেয়। গত ২১ শে জানুয়ারী ওলামা লীগই সর্বপ্রথম জুয়ার বিরুদ্ধে বলে। ওলামা লীগের সে প্রতিবাদ আমলে নিলে আজকের অবস্থা হতো না। ওলামা লীগই সর্বপ্রথম সিনহার বিরুদ্ধে বলে এবং ওলামা লীগের কথাই সত্য হয়। কাজেই আওয়ামী লীগের প্রাণ হিসেবে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া প্রধানমন্ত্রী ¯েœহধন্য ওলামা লীগকে বিশেষ মূল্যায়ন করতে হবে।
বক্তারা বলেন, বর্তমানে দেশে শিশু-কিশোররাও পর্নোগ্রাফিতে ভয়ঙ্কর আশক্ত। সারা দেশে হাজার হাজার সন্ত্রাসী কিশোর গ্যাংদের অস্তিত্ব ধরা পড়ছে। মারাত্মকহারে বেড়ে চলছে খুন-ধর্ষণ। অন্যদিকে দুর্নীতি, জুয়ায় সয়লাব সারাদেশ। পাশাপাশি দায়িত্বহীনতা ভেজাল, মজুদদারী, অনিয়ম আর বিশৃঙ্খলায় বিপর্যস্থ সারাদেশ ও জনগণ। অথচ ৯৮ ভাগ মুসলমানের দেশে এমনটি হওয়ার কথা ছিলনা।
নেতৃবৃন্দ বলেন, যদি সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ যথাযথভাবে পালন করা হতো তাহলে তার বরকতে সবার মধ্যে ইসলামী চেতনা আসতো এবং সব পাপাচার, অনাচার, ব্যাভিচার, অনিয়ম, ভেজাল, দুর্নীতি বন্ধ হতো। ইনশাআল্লাহ।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের হক্ব দরবার শরীফ; ‘রাজারবাগ দরবার শরীফ’ আমাদের পূর্ব পরিচিত। সহীহ দ্বীন ইসলাম প্রচারে যাদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। জামাত-শিবির রাজাকার বিরোধী কার্যক্রমে যারা প্রখ্যাত এবং প্রশংসিত। সেই প্রখ্যাত পবিত্র রাজারবাগ দরবার শরীফের বিরুদ্ধে কুখ্যাত দুর্নীতিবাজ ফালুর এনটিভি জামাত-শিবির প্ররোচিত হয়ে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। পুরো রিপোর্ট আমরা দেখেছি। দেখে সবাই বুঝতে পেরেছেন পুরোটাই সাজানো, উদ্দেশ্য প্রণোদিত, পক্ষপাতদুষ্ট এবং দুরভিসন্ধিমূলক। কারণ পুরো রিপোর্টে কোথাও রাজারবাগ শরীফ উনার কোনো দায়িত্বশীল প্রতিনিধির বক্তব্য বা উনাদের মন্তব্য প্রকাশিত হয়নি। যা করা হয়েছে সবই ভিত্তিহীন অভিযোগ মাত্র এবং এর দ্বারা রাজারবাগ শরীফ হযরত পীর সাহেব ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার অনুসারী ৬০ লাখ মুররিদ, ভক্ত, অনুসারীগণের সামাজিক সম্মানের প্রতি আঘাত করা হয়েছে। এতে দেশের একটা বিশাল গোষ্ঠীর মানবিক বিপর্যয় ঘটানো হয়েছে। উনাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। কাজেই জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে।

বক্তারা বলেন, রাজারবাগ শরীফের মুখপত্র মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ, দৈনিক আল ইহসান শরীফ উনাদের মধ্যে গত তিন দশক ধরে সন্ত্রাসবাদ, মৌলবাদ, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি, ধর্মব্যবসায়ী ইত্যাদির বিরুদ্ধে বলা হয়েছে, হচ্ছে। জামাতী রাজনীতি নিষিদ্ধের কথা বলা হয়েছে এবং হচ্ছে। সে কারণে জামাতী মুখপত্র দেইল্লা রাজাকার ২০০৪ সালে সংসদে মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ নিষিদ্ধের বিল এনেছে। একই ধারাবাহিকতায় এনটিভি মাত্র ১০/২০ জন লোকের যোগসাজশে একটা ভুয়া রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এটা মূলতঃ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সম্মানিত ইসলামী শক্তিকে দুর্বল করার চরম ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র। কাজেই এটা রুখতে খোদ সরকারকেই কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

বক্তারা বলেন, কুখ্যাত দুর্নীতিবাজ ফালুর এনটিভিতে তথাকথিত ইসলামী প্রোগ্রামে মওদুদী জামাত এবং সালাফি মতাদর্শের লোক দিয়ে প্রোগ্রাম করে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার নামে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। ইসলামী জিজ্ঞাসা নামক অনুষ্ঠানে যাদেরকে এনটিভি আমন্ত্রণ করে বা যারা প্রশ্নের উত্তর দেয়- তারা সাঈদীর বেয়াই কামালউদ্দীন জাফরী, সালাফি নেতা মুজাফফর বিন মহসিনের মতো মওদুদী জামাতের লোকেরা। যারা ইতিপূর্বে জামাতীরা সালা
ফি মওদুদীদের মদদ দিয়ে আসছিল। তাই ওলামা লীগের দাবী হলো- দেশে সন্ত্রাসীবাদ সালাফীবাদ প্রচারের দায়ে এবং জামাত সন্ত্রাসীদের সমূলে উৎখাত করার জন্য এনটিভির লাইসেন্স বাতিল করা।

বক্তারা বলেন, আমরা জানি রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর সাহেব ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি পৈত্রিকভাবেই অনেক সম্পদশালী। সম্পদশালী হওয়ার পরও তিনি কিংবা উনার পরিবারের কোন সদস্য উনাদের নামে বাংলাদেশের কোন জায়গায় কোন সম্পত্তি বা সম্পদ করেন নাই কিংবা করার কোন চেষ্টাও করেন নাই। সেখানে এনটিভির প্রকাশিত প্রতিবেদনে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ অমূলক ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং মিথ্যা ও প্রতারণাপূর্ণ ছাড়া কিছু নয়।

বক্তারা আরো বলেন, সারাদেশে রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর সাহেব ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার ৬০ লাখ মুরিদ রয়েছেন। রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর সাহেব ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি নিজেও সব সময় সত্যের উপর চলেন এবং মুরীদদেরকেও চলতে বলেন। উনার কথা না শুনে যদি কেউ বা কারা কোথায় কি করলো তার দায়ভার রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর সাহেব ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার উপর বর্তায়না। যেমন ক্যাসিনো স¤্রাট ইসমাইল, খালেদ, জিকে শামীম তথা ছাত্রলীগের অভিযুক্ত কর্মকা-ের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগকে দায়ী করা যায়না।

বক্তারা আরো বলেন, ওলীআল্লাহগণের দেশ- বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুই ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন রাষ্ট্রীয়ভাবে চালু করেছিলেন। কিন্তু এনটিভি তার বিরোধীতা করেছে। এমনকি এনটিভি পবিত্র শবে বরাত শরীফও অস্বীকার করেছে। শবে মিরাজেরও মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দীদার বা সাক্ষাত মুবারক হয়েছিল তাও অস্বীকার করছে। পবিত্র মীলাদ শরীফ, পবিত্র মাযার শরীফ অস্বীকার করছে। অর্থাৎ পিস টিভির মতো সালাফীবাদ, ওহাবীবাদ প্রচার করে দেশে সন্ত্রাসবাদের চাষাবাদ করতে চাইছে। কাজেই অবিলম্বে রাষ্ট্রদ্রোহী এনটিভির লাইসেন্স বাতিল করতে হবে।

সমাবেশ ও মানবন্ধনে সমন্বয় করেন, বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগের সভাপতি- পীরজাদা, পীর, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বর্ষীয়ান বিপ্লবী জননেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্জ মাওলানা মুহম্মদ আখতার হুসাইন বুখারী, (পীর সাহেব, টাঙ্গাইল)। বক্তব্য রাখেন- সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্জ কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদের সভাপতি- আলহাজ্জ হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার, সাংগঠনিক সম্পাদক- হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল জলিল, মাওলানা মুহম্মদ শওকত আলী শেখ ছিলিমপুরী, দপ্তর সম্পাদক- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ, লায়ন আলহাজ্জ মাওলানা মুহম্মদ আবু বকর সিদ্দিক, আলহাজ্জ মাওলানা মুহম্মদ মুজিবুর রহমান আল মাদানী, হাফেজ ক্বারী মুহম্মদ শাহ আলম ফরাজী, মুফতি মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সবুর মিয়া, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, হাফেজ মুহম্মদ আব্দুল বারী, কারী মাওলানা মুহম্মদ আসাদুজ্জামান আল কাদেরী, আলহাজ মুহম্মদ খোরশেদ আলম রেজভী, কাজী অধ্যাপক মাওলানা মুহম্মদ নোমান চৌধুরী, সহ সভাপতি- মাওলানা মুহম্মদ শোয়েব আহমেদ গোপালগঞ্জী, হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আল আমীন, আলহাজ্জ মাওলানা মুহম্মদ রফিকুল ইসলাম সিদ্দীকি আল কুরাইশি, হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সোবাহান, মাওলানা মুহম্মদ ওমর ফারুক গোপালগঞ্জী, মাওলানা মুহম্মদ আব্দুর রব-সা:সম্পাদক শ্রীনগর উপজেলা ওলামা লীগ, মাওলানা মুহম্মদ মাহবুব আলম, কাজী মাওলানা মুহম্মদুল্লাহ, মাওলানা মুহম্মদ মোকাম্মেল হুসাইন চৌধুরী প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদ চেয়ারম্যান- আলহাজ্জ হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার। মিছিল শেষে শহীদ বঙ্গবন্ধু রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার রূহের মাগফিরাত কামনা করে ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হায়াতে তৈয়বার জন্য দোয়া মোনাজাত করেন- আলহাজ্জ কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী।

Facebook Comments Box