সাবত (শনিবার), ০৪ মে ২০২৪

মহিষ পালন বাড়ছে নাটোরে

মহিষ পালন বাড়ছে নাটোরে

আরএফএন ডেস্ক : কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে শুধু গরু নয়, মহিষ পালনের পরিধিও বেড়েছে নাটোরে। বৈচিত্র্য আনতে এখন অনেকেই মহিষ কোরবানি করছেন। আগামীতে পদ্মার চর এলাকাসহ সারা জেলায় মহিষ পালনের পরিধি আরও বাড়তে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলায় মোট ২ হাজার ৭৬৯টি মহিষ পালন করা হয়েছে। কয়েক বছর আগেও এ সংখ্যা ছিল শতকের ঘরে।

গত কোরবানির ঈদে জেলায় ৪১০টি মহিষ কোরবানি দেওয়া হয়েছিল। এবারের ঈদে এ সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

মহিষের মূল খাদ্য কাঁচা ঘাসের উৎস বিবেচনায় নাটোরের লালপুর উপজেলার পদ্মার চর এলাকা মহিষ পালনে অগ্রবর্তী। এছাড়া চলনবিল অধ্যুষিত বড়াইগ্রাম, গুরুদাসপুর ও সিংড়া উপজেলাসহ জেলার সব উপজেলাতেই কম-বেশি মহিষ পালন করা হয়। খামারগুলোতে গরুর পাশাপাশি মহিষও জায়গা করে নিচ্ছে।

বিভিন্ন দেশের আকর্ষণীয় গরু আর মহিষের সমাহারে সৌখিন খামার গড়ে তুলেছেন রেকাত আলী। প্রতিদিন অসংখ্য দর্শনার্থী খামারে থাকা ৬৮টি গরু আর ৫টি মহিষ দেখতে ভিড় করছেন, হচ্ছেন মুগ্ধ। নাটোর সদর উপজেলার ডালসড়ক এলাকাতে বৈচিত্র্যময় এ খামারের অবস্থান। একই আকৃতির পাঁচটি বিহারি জাতের মহিষ ওজনে ১৫ মণ ছাড়িয়েছে। লালপুর উপজেলার পদ্মার চর এলাকার পালপাড়া গ্রামের মো. জঈমুদ্দিন বলেন, বাবা-দাদার সময় থেকে আমরা মহিষ পালন করে আসছি। বর্তমানে আমার ৫০টিসহ চাচাতো ভাইদের সব মিলিয়ে দুই শতাধিক মহিষ আছে। ঈদে নিজেরা মহিষ কোরবানি করব। ঈদের বিক্রিও শুরু হয়ে গেছে। দেশি ও বিহারি জাতের সব মহিষের এক একটির দাম লাখ টাকার উপরে।

মহিষের অসুখ তুলনামূলকভাবে কম। তবে বর্ষাকালে গলাফোলা, পেটফোলা রোগ দেখা দেয়। প্রাণিসম্পদ অফিসে ভ্যাকসিন পর্যাপ্ত নয় বলে জানালেন মো. জঈমুদ্দিন। পদ্মার চরে ঘাসের আধিক্য থাকায় এখানে মহিষ পালন সহজ বলে জানালেন অপর মহিষ পালনকারী বিলমাড়িয়া এলাকার ঝন্টু মোল্লা।
নাটোর সদর উপজেলার গোবিন্দপুর ঘাট এলাকার রেজাউল ইসলাম এবারই প্রথম খামারে ঈদ উপলক্ষে চারটি মহিষ হৃষ্টপুষ্ট করেন। খামার থেকেই দুটি বিক্রি করেছেন দুই লাখ ৫৫ হাজার টাকায়। অবশিষ্ট দুটি তিন লাখে বিক্রি হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী তিনি। সৌখিন খামারি রেকাত আলী কোরবানিতে বৈচিত্র্য আনতে তার খামারে হৃষ্টপুষ্ট পাঁচটি মহিষই কোরবানি করবেন।

লালপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে মহিষ পালনের আগ্রহ বাড়ছে এলাকায়। মহিষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি বলে তেমন রোগ নেই বললেই চলে। এর দৈহিক বৃদ্ধিও বেশি। খাদ্যের গুণাগুণ বিবেচনায় মহিষের মাংসে কোলেস্টেরল কম বলে স্বাস্থ্যসম্মত। সব দিক বিবেচনায় মহিষ পালন অত্যন্ত লাভজনক। চলতি বছরে মহিষের উন্নয়নে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রস্তাবিত একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন পর্যায়ে এলে খামারিরা প্রশিক্ষণ ও চিকিৎসা সুবিধা পেয়ে ব্যাপকভাবে উপকৃত হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এ কর্মকর্তা।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. বেলাল হোসেন বলেন, জেলায় সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হিসেবে মহিষ পালনের পরিধি বাড়াতে প্রাণিসম্পদ বিভাগ মহিষপালনকারীদের সহযোগিতায় কার্যকর সব রকমের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

Facebook Comments Box