আহাদ (রবিবার), ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫

২৮ বছরে বাড়িভাড়া বেড়েছে ৬০০ শতাংশ

ফের দূষিত বাতাসের শীর্ষে ঢাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণে ১৯৬১ সালে তিন বছরের জন্য একটি অধ্যাদেশ জারি করেছিল তৎকালীন সরকার। ওই বিধিমালা অধ্যাদেশের মেয়াদ শেষে প্রণীত ও প্রবর্তিত হয়। এ অধ্যাদেশের ক্ষমতাবলে সরকার ১৯৬৪ সালে প্রণীত বিধিমালাটি ১৯৮৫ সালে ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর রেখেছিল।

১৯৯১ সালে ওই অধ্যাদেশের অনুসরণ করেই জারি হয় ‘বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন’। এর ৭ ধারা অনুয়ায়ী মানসম্মত ভাড়ার অধিক ভাড়া বৃদ্ধি করা হলে ওই অতিরিক্ত ভাড়া কোনো চুক্তিতে ভিন্নরূপ কিছু থাকা সত্ত্বেও আদায়যোগ্য হবে না। আইনের ১৩(১) ধারা মোতাবেক, বাড়ি ভাড়া দেয়ার রসিদ ভাড়াটিয়াকে দিতে হবে। কিন্তু বেশির ভাগ বাড়িওয়ালা ভাড়া নিয়ে রসিদ দেন না। আইনের ১৫ ধারা অনুযায়ী, ভাড়া নির্ধারণের দায়িত্ব বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রকের। দেশে বাড়িভাড়া আইন হয়েছে। কিন্তু তা নিয়ন্ত্রণ করার কোনো কর্তৃপক্ষ নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইনটিকে আরো যুগোপযোগী করে তা বাস্তবায়ন করতে হবে।

১৯৯১ বাড়িভাড়া আইন অনুযায়ী ঢাকা সিটি করপোরেশন বা ডিসিসি ৯০টি ওয়ার্ডের (বর্তমানে আরো কিছু ওয়ার্ড রয়েছে দুই সিটি মিলে) ১০ কর অঞ্চলে, ৭৭৩টি এলাকায় জীবনযাত্রার মান অনুসারে ভাড়ার হার নির্ধারণ করে দিয়েছে। পাকা বাড়ির ক্ষেত্রে এ ভাড়া সর্বনিম্ন প্রতি বর্গফুট চার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১২ টাকা পর্যন্ত। ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে ডিসিসি আবাসিক এলাকাকে কয়েকটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছে : (১) প্রধান সড়কের পাশে, (২) গলির ৩০০ ফুটের মধ্যে এবং (৩) গলির ৩০০ ফুটের বাইরে। এ ছাড়া আবাসিক, বাণিজ্যিক ও শিল্পÑ এ তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে এগুলোকে। হোল্ডিং নম্বর, নির্মাণের সময়, কাঠামো নির্মাণশৈলী, অবস্থান ও পজেশন হস্তান্তরের শর্তের ওপর ভিত্তি করে ভাড়ার তারতম্য হতে পারে। কিন্তু ডিসিসির এসব নিয়ম বাড়ির মালিকদের অনেকে মানছে না। ফলে ভাড়া সন্ত্রাসের শিকার রাজধানীর ৯০ শতাংশ মানুষ। যখন-তখন বাড়িভাড়া বাড়িয়ে জীবন দুর্বিষহ করে তোলা হচ্ছে। তিন লাখ বাড়িওয়ালার কাছে জিম্মি প্রায় দেড় কোটি মানুষ।

এক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বছরের শুরুতেই বেড়েছে বাড়িভাড়া। গত ২৮ বছরে বাড়িভাড়া বেড়েছে ৬০০ শতাংশ। ভাড়াটিয়াদের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় তারা বাধ্য হয়ে বেশি ভাড়া দিচ্ছেন। ডিসিসির নির্ধারিত ভাড়ার ছয়-সাত গুণ বেশি আদায় করা হলেও বাড়িওয়ালারা কিন্তু সে অনুপাতে কর দিচ্ছেন না। সরকার যদি স্বল্প মূল্যে বাড়ি তৈরি করে তা দীর্ঘমেয়াদি কিস্তিতে ভাড়ার টাকায় বরাদ্দ দেয়, তাহলে এ সমস্যা অনেক কমে আসবে। প্রতি বছরই একাধিকবার বিভিন্ন অজুহাতে বাড়ানো হয় বাড়িভাড়া।

Facebook Comments Box