জুমুআ (শুক্রবার), ০১ নভেম্বর ২০২৪

ইউরোপের বাজারে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের পোশাকের

নিউজ ডেস্ক: ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি বেড়েছে। শুধু বেড়েছে এমনটিই নয়, ইউরোপের বাজারে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে বাংলাদেশের। ইউরোপীয় পরিসংখ্যান সংস্থা ইউরোস্ট্যাট প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বরের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশ থেকে ২০২১ সালের চেয়ে ৩৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ পোশাক বেশি কিনেছে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ইউরোপের বাজারে পোশাক রফতানির ক্ষেত্রে চীন সবার শীর্ষে। তবে প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম। অর্থাৎ বাংলাদেশের পোশাক রফতানিতে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি হয়েছে ইউরোপের বাজারে।

তিনি উল্লেখ করেন, ইউরোস্ট্যাটের তথ্য অনুযায়ী ইউরোপের ক্রেতারা এখনও বাংলাদেশের দিকে ঝুঁকছে। আর এটি সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশে গ্রিন ফ্যাক্টরি বাড়ানোর মধ্য দিয়ে। তিনি মনে করেন, ইউরোপের ক্রেতাদের মধ্যে আমাদের পোশাকের চাহিদা বাড়ার আরেকটি কারণ বাংলাদেশের পোশাকের গুণগতমান আগের চেয়ে বেড়েছে।

ইউরোপীয় পরিসংখ্যান সংস্থা ইউরোস্ট্যাট প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, জানুয়ারি থেকে নভেম্বর ২০২২ সময়ের মধ্যে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিশ্ব থেকে ৯৫ দশমিক ১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে। ২০২১ সালে একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২২ দশমিক ৩৯ শতাংশ। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে ইইউ বাংলাদেশ থেকে ২১ দশমিক ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে। বাংলাদেশ ইইউর জন্য পোশাক আমদানির দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎস। ২০২১ সালের একই সময়ের তুলনায় বাংলাদেশ থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পোশাক আমদানি ৩৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেড়েছে।

চীন ২৯ দশমিক ৪০ শতাংশ শেয়ার নিয়ে ইইউ’তে সর্ববৃহৎ পোশাক সরবরাহকারীর অবস্থান ধরে রেখেছে। ২০২২ সালের প্রথম ১১ মাসে চীন থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আমদানি ২৭ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। বছরওয়ারি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৯ দশমিক ২৯ শতাংশ ।

একই সময়ে তুরস্ক থেকে আমদানিও পূর্ববর্তী বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেড়েছে। তুরস্ক থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আমদানি ১১ দশমিক শূন্য ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। ভারত থেকেও আমদানি ৪ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, বছরওয়ারি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২১ দশমিক ৫২ শতাংশ।

অন্য শীর্ষ সরবরাহকারী দেশগুলোর মধ্যে কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান, মরক্কো, শ্রীলঙ্কা ও ইন্দোনেশিয়া থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আমদানি যথাক্রমে ৩৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ, ৩৪ দশমিক ১৬ শতাংশ, ২৭ দশমিক ৯৯ শতাংশ, ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ, ১৭ দশমিক ৩২ শতাংশ এবং ২৭ দশমিক ৮০ শতাংশ বেড়েছে।

এদিকে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তৈরি পণ্য রফতানি হয়েছে ৫১৩ কোটি ৬২ লাখ ৪০ হাজার ইউএস ডলার। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে যা হয়েছিল ৪৮৫ কোটি ৩ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার। শতাংশের হিসাবে ২০২২ সালের জানুয়ারির তুলনায় ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে রফতানি আয় বেড়েছে ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ।

আর বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সার্বিকভাবে চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে তিন হাজার ২৪৫ কোটি ডলার বা প্রতি মাসে গড়ে ৪৬৪ কোটি ডলারের রফতানি আয় হয়েছে। নভেম্বর, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে প্রতি মাসে গড়ে ৫২০ কোটি ডলার রফতানি হয়েছে।

Facebook Comments Box