ইসনাইন (সোমবার), ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫

কুড়িগ্রামে ফের বাড়ছে পানি

কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা : কুড়িগ্রামে বন্যার পানি নামতে না নামতেই ধরলা নদীর পানি নতুন করে ফের বাড়তে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ধরলা অববাহিকার বন্যাকবলিত মানুষের জন্য তা হয়ে উঠেছে মরার উপর খাঁড়ার ঘা।

মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টায় ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় অস্বাভাবিকভাবে ধরলার পানি বেড়েছে ৪০ সেন্টিমিটার।

কুড়িগ্রাম জেলার সাড়ে ৯ লাখ বানভাসী মানুষ বিশুদ্ধ খাবার পানি ও অপ্রতুল ত্রাণ তৎপরতায় রয়েছে চরম দুর্ভোগে। বন্যাকবলিত এলাকায় দেখা দিয়েছে পানিবাহিত নানা রোগ-বালাই। বন্যার্ত লাখ লাখ মানুষ দুর্বিষহ জীবন-যাপন করছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে ১৯ জন। প্রতিদিন রোগাক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় লোকজন নিজ নিজ বাড়িতে ফিরতে শুরু করলেও বন্যার পানির তোড়ে লণ্ড-ভণ্ড ঘরবাড়ি তাদের ভাবিয়ে তুলেছে।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোলরুম সূত্রে জানা যায়, বন্যায় জেলার ৬০টি ইউনিয়নে ৮৯৪টি গ্রামের ২ লাখ ৩৮হাজার ৬৭২টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত। এছাড়া চলতি বন্যায় নদী ভাঙনের শিকার হয়ে নিঃস্ব হয়েছে এক হাজার ৮৫৩টি পরিবার। ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৩ হাজার হেক্টর।
বন্যায় এক হাজার ২৪৫ কিলোমিটার রাস্তা, ৪০ কিমি বাঁধ ও ৪১টি ব্রিজ/কার্লভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নলকূপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৯ হাজার ৭৩৪টি। প্রায় দুই লক্ষাধিক গবাদিপশু পানিবন্দি। বন্যার কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও কলেজ মিলে এক হাজার ২৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোছা সুলতানা পারভীন জানান, বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এ পর্যন্ত জেলা প্রশাসন থেকে এখন ৮শ মে. টন জিআর চাল, ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৭ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও ঈদুল আজহা উপলক্ষে ৬ হাজার ৪২৮ মে. টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বন্যায় নিহত ১৬টি পরিবারকে সহায়তা দেওয়া হয়েছে ২০ হাজার টাকা করে ৩ লাখ টাকা।

Facebook Comments Box