মিশালকে দেয়া সুচির সেই ‘মুসলিমবিরোধী’ সাক্ষাৎকার
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন বিষয়ে প্রশ্ন করায় বিবিসির এক মুসলমান সাংবাদিকের ওপর চটে গিয়েছিলেন দেশটির গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী অং সান সু চি। বিবিসি রেডিও ফোরের জন্য নেওয়া ওই সাক্ষাত্কারে মিয়ানমারের মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের বিষয়ে সু চিকে কয়েকবারই প্রশ্ন করেন নারী সাংবাদিক মিশাল হুসাইন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সু চিকে বলতে শোনা যায়, একজন মুসলমান সাংবাদিক যে তাঁর সাক্ষাত্কার নেবেন সেটি তাঁকে আগে জানায়নি কেউ। জানা গেছে, বিবিসি রেডিও ফোরের‘টুডে শো’তে সু চির ওই সাক্ষাত্কার নেন মিশাল হুসাইন। সাক্ষাত্কার চলাকালে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর নির্যাতন নিয়ে সুচিকে বারবার প্রশ্ন করেন মিশাল। একপর্যায়ে শান্তশিষ্ট বলে পরিচিত সু চি তাঁর নিয়ন্ত্রণ হারান।‘একজন মুসলমান সাংবাদিক আমার সাক্ষাত্কার নেবেন বিষয়টি আগে আমাকে জানায়নি কেউ’ বিড় বিড় করে এটা বলতে দেখা যায় সু চিকে।
ডেইলি মেইল পত্রিকা জানিয়েছে, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর বৌদ্ধদের হামলা ও নির্যাতন চালানোর বিষয়ে নীরব থেকেছেন সু চি। সাম্প্রতিককালে তাঁকে এ নিয়ে অনেক প্রশ্ন করা হলেও তিনি এসব বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা তাঁর অনেক ভক্তই এতে বিস্মিত হন। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, মিয়ানমারের সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধদের মধ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাবিরোধী মনোভাব প্রবল। তাই রোহিঙ্গা নিয়ে মন্তব্য করে বৌদ্ধদের অপছন্দের তালিকায় যেতে চাননি সু চি। বিবিসির সাক্ষাত্কারে মিয়ানমারের মুসলমানদের ওপর বৌদ্ধদের নির্যাতন এবং মুসলমানদের দেশ ত্যাগ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সু চি বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে অনেক বৌদ্ধও দেশ ছেড়ে চলে গেছে। সামরিক শাসনামলে মিয়ানমারের সব মানুষই দুঃখকষ্টে ছিল।’ ডেইলি মেইল জানিয়েছে, মিয়ানমারের মাত্র ৪ শতাংশ মানুষ রোহিঙ্গা মুসলমান। এদের মিয়ানমারের নাগরিকত্ব থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে। এ ছাড়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের রাজনীতিতে অংশ নেওয়ারও কোনো অধিকার নেই। বিবিসির রেডিও ফোরের প্রথম মুসলমান উপস্থাপিকা মিশাল হুসাইন (৪৩)। পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত এই ব্রিটিশ নাগরিক তিন সন্তানের মা। তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে পড়াশোনা করেছেন। সূত্র : বিবিসি।