জুমুআ (শুক্রবার), ২৯ মার্চ ২০২৪

সর্বোচ্চ বাজেটে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার দাবি

সর্বোচ্চ বাজেটে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ পালনের দাবি

ষ্টাফ রিপোর্টার : সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাপবিত্র বিলাদত শরীফ (যমীনে আগমন মুবারক দিবস) উপলক্ষে খুশী প্রকাশ করার মাঝেই সকল সৃষ্টির কামিয়াবী ও কল্যাণ নিহিত। তাই সরকারের দায়িত্ব কর্তব্য কর্তব্য হলো আসন্ন পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ তথা পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যাপকভাবে আয়োজনে ও মহাসমারোহে পালনে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সর্বোচ্চ বাজেট বরাদ্দ করে এখন থেকেই প্রস্তুতি নেয়া। এ জন্য সরকারের সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগে বিশেষ নির্দেশনা দিয়ে ১২টি বিষয় জারী করা।

আজ জাতীয় প্রেসক্লাবে মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহুরিল আ’যম শরীফ মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ উনার আগমন উপলক্ষে “রাষ্ট্রীয়ভাবে বিশেষ প্রস্তুতি গ্রহণ, সর্বোচ্চ বাজেট বরাদ্দ, মাসব্যাপী ছুটি ঘোষণা, বিশেষ অনুষ্ঠানসূচী প্রণয়ণ এবং বিশ্বের সকল দেশের প্রত্যেক সরকারের জন্য দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো ১২টি বিষয় পালন করা ও জারী করা” শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। সেমিনারে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন, দৈনিক আল ইহসান এবং মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক মুফতিয়ে আ’যম আল্লামা আবুল খায়ের মুহম্মদ আযীযুল্লাহ এবং মুহম্মদীয়া জামিয়া শরীফের মুহতামিম আল্লামা মুহম্মদ আলমগীর হুসাইন প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন, মুহম্মদ আবু বকর সিদ্দীক হাসান।

সেমিনারে আলোচকরা বলেন, যে কোনো লোক, যে কোনো সময়, যে কোনো নিয়ামত লাভ করলে সে সন্তুষ্ট হয়, খুশি প্রকাশ করে। পরীক্ষার ফল প্রকাশ পেলে পরীক্ষার্থীরা এত খুশি হয় যে, তাদের খুশি প্রকাশের জন্য মিষ্টি কেনার কারণে দেশের সমস্ত দোকানের মিষ্টি শেষ হয়ে যায়। একটা সাধারণ দুনিয়াবী কারণে যদি মানুষ এত খুশি হয় তাহলে যিনি আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে এই মাসে তাহলে কতটুকু খুশি প্রকাশ করতে হবে। এ মাসে যার যতটুকু তাওফীক রয়েছে, যেভাবে তাওফীক রয়েছে ঠিক ততটুকু সেভাবে সে খুশি প্রকাশ করবে; তা হলে তার জন্যে কামিয়াবী রয়েছে। কারণ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হলেন নিয়ামতে উযমা মুবারক তথা সর্বশ্রেষ্ট নিয়ামত মুবারক। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমাদেরকে যে নিয়ামত মুবারক দেয়া হয়েছে তা তোমরা আলোচনা কর, প্রকাশ কর।” (পবিত্র সূরা দোহা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১১) এ আয়াত শরীফ সম্পর্কে উল্লেখ্য যে, নিয়ামতে উযমা বা সবচাইতে বড় নিয়ামত ও সর্বশ্রেষ্ট নিয়ামত মুবারক হচ্ছেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। কারণ কায়িনাত বা সৃষ্টিজগত যদি উনাকে না পেত তাহলে মহান আল্লাহ পাক উনাকেও পেত না। সুবহানাল্লাহ!

বক্তারা বলেন, হালে সরকারিভাবে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করা হয়। ভিআইপি রাস্তায় কিছু রঙিন পতাকা, ব্যানার ইত্যাদি টানানো হয়। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু মাহফিল, সেমিনার ইত্যাদির ব্যবস্থা করা হয় এবং একেই যথেষ্ট বলে মনে করা হয়। অথচ তুলনামূলক তথ্যে দেখা যায়, এদেশে অন্যান্য সরকারী অনুষ্ঠানে যে বিপুল অর্থ ব্যয় করা হয় তার চেয়ে অনেক কম অর্থ কেবল নয় বরং কম উৎসাহ ও কম আয়োজনের দ্বারা যেনোতেনোভাবে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ তথা ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ-উনার মতো পবিত্র দিনটিকে অতিক্রান্ত করা হয়। অথচ ঈমানের একান্ত দাবির কারণেই শুধু এ মুবারক দিনেই কেবল নয় বরং পুরো মাসে সরকারি বেসরকারি সর্বমহলে সর্বোচ্চ বাজেট বরাদ্দ করে অত্যন্ত খুশীর সাথে, ব্যাপক আয়োজনে, বিপুল উৎসাহে, গভীর মূল্যায়নে, স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করতে হবে।

বক্তারা আরো বলেন, যেহেতু বাংলাদেশের ৯৮ ভাগ জনগণ মুসলমান, প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী মুসলমান। পাশাপাশি বাংলাদেশে ইসলামকে রাষ্ট্র দ্বীন ঘোষণা করা হয়েছে। তাই বাংলাদেশ সরকারের জন্য দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে- হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমনী মাস তথা সাইয়্যিদুল আসইয়াদ, সাইয়্যিদুশ শুহুর, শাহরুল আ’যম শরীফ মাহে রবীউল আউয়াল শরীফ উপলক্ষে সর্বোচ্চ বাজেট বরাদ্দ করে “রাষ্ট্রীয়ভাবে বিশেষ প্রস্তুতি গ্রহণ করা। মাসব্যাপী ছুটি ঘোষণা করে, সারাদেশব্যাপী ব্যাপক ও শান শওকতপূর্ণ কর্মসূচি গ্রহণ এবং যথাযথ তা’যীম-তাকরীম ও শান-শওক্বতের সাথে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালনের সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, বিশ্বের সকল দেশের প্রত্যেক সরকারের জন্য আসন্ন সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মহাসমারোহে ব্যাপকভাবে পালনে দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো ১২টি বিষয় পালন করা ও জারী করা। বিষয়গুলো হচ্ছে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন, রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে প্রত্যক্ষভাবেই হোক আর পরোক্ষভাবেই হোক অর্থাৎ যেভাবেই হোকনা কেন যেই মানহানীকর বিষয় প্রচার, প্রসার করবে অথবা প্রকাশ করবে তাদেরকে এবং তাদের সংশ্লিষ্ট সকলের শাস্তিই মৃত্যুদন্ড দিতে হবে। এটাই সম্মানিত ও পবিত্র শরীয়ত উনার হুকুম। তাই জারি করতে হবে।

পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ ব্যাপকভাবে পালনে সরকারীভাবে সর্বোচ্চ বাজেট বরাদ্দ করতে হবে। সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহুরিল আ’যম, মহাপবিত্র রবিউল আউওয়াল শরীফ মাসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারী-বেসরকারী সকল প্রতিষ্ঠানে মাসব্যাপী ছুটি ঘোষণা করতে হবে। একই সাথে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ মহাপবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ দিবসকে বিশ্ব ছুটির দিবস হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহুরিল আ’যম, মহাপবিত্র রবিউল আউওয়াল শরীফ মাসে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যাপকভাবে মাসব্যাপী বিশেষ মাহফিলের আয়োজন করতে হবে। সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ মহাপবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ উনার সম্মানার্থে সর্বপ্রকার অশ্লীল ও অশালীন কাজ বন্ধ করতে হবে।

সব শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সুমহান জীবনী মুবারক বাধ্যতামূলক করতে হবে। সরকারী-বেসরকারী সকল প্রতিষ্ঠান ও মসজিদ-মাদরাসায় সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ মহাপবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ দিবসে বিশেষভাবে মীলাদ শরীফ মাহফিল ও বিশেষ তাবারুকের আয়োজন করতে হবে। পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ ব্যাপকভাবে পালনে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগে সরকারীভাবে আবশ্যিক নির্দেশনা জারী করা, সরকারী-বেসরকারী স্থাপনাসমূহ মনোরম সাজে সজ্জিত করা, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি এবং নিজ নিজ এলাকায় মন্ত্রী-এমপি কর্তৃক সর্বস্তরের জনগণের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করা, বছরব্যাপী ইসলামী অনুষ্ঠানসূচী ঘোষণা করা, বই প্রদর্শনী, সামরিক প্রদর্শনী, পতাকা উত্তোলন, অস্বচ্ছল ও বেকারদের চাকুরী এবং গৃহহীনদের গৃহ দেয়ার ঘোষণা দেয়াসহ বিভিন্ন শরঈ কর্মসূচী বাস্তবায়িত করতে হবে।

১২টি বিষয় পালন ও জারী প্রসঙ্গে বক্তারা আরো বলেন, পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উপলক্ষে সকল সরকারী প্রতিষ্ঠানে ছাড় দেয়া এবং বিশেষ পণ্য সামগ্রী তৈরী করতে হবে। সর্বস্তরে সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর, পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জারী করতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মতো স্বতন্ত্র শক্তিশালী গবেষণা কেন্দ্র এবং পৃথক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে ‘পবিত্র না’তু উম্মি রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ উনাকে জাতীয় না’ত শরীফ হিসেবে ঘোষনা করতে হবে। দেশের সরকারী-বেসরকারী সকল প্রতিষ্ঠান ও মসজিদ-মাদরাসায় উক্ত নাত শরীফ প্রতিদিন পাঠের আয়োজন করতে হবে। দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে ইসলামী তাহযীব-তামাদ্দুন নিয়ে মাসব্যাপী বিশেষভাবে প্রতিযোগীতার আয়োজন করতে হবে।

Facebook Comments Box