জুমুআ (শুক্রবার), ২৯ মার্চ ২০২৪

পুলিশের রেশনে পোকা খাওয়া ও পচা চাল

ভর্তুকি পাবে চাল রফতানিকারকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুলিশের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ রেশন সুবিধাভোগী সরকারি অন্যান্য সংস্থার জন্য বরাদ্দকৃত চালের মান নিয়ে গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বিশেষ করে রাজারবাগ পুলিশ লাইনের রেশন স্টোর থেকে অত্যন্ত নিম্ন মানের পোকা খাওয়া ও পচা চাল বিতরণের অভিযোগ হরহামেশাই পাওয়া যাচ্ছে। গন্ধযুক্ত ও নিম্ন মানের চাল নিয়ে বিভিন্ন সময়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন রেশন পাওয়া ব্যক্তিরা।
তাদের অভিযোগ, খাদ্য অধিদপ্তর ও ঠিকাদারদের একটি শক্তিশালী চক্র পরস্পর যোগসাজশে সবার নাকের ডগায় এ ধরনের দুর্নীতি করে যাচ্ছে বছরের পর বছর। অভিযোগ করেও কোনো লাভ হচ্ছে না। এ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনেও (দুদক) প্রায়ই আসছে বিভিন্ন অভিযোগ। সম্প্রতি বেশকিছু অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার কথা ভাবছে সংস্থাটি। বিষয়টি অনুসন্ধানের পাশাপাশি দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে যেকোনো সময় অভিযান চালানো হতে পারে।

সর্বশেষ গত ৮ সেপ্টেম্বর দুদকের অভিযোগকেন্দ্রের হটলাইন নম্বরে (১০৬) এ বিষয়ে একটি অভিযোগ আসে। কনস্টেবল পদমর্যাদার এক ব্যক্তি এ অভিযোগ করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগ খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।

ওই অভিযোগে বলা হয়, রাজারবাগ পুলিশ লাইনের রেশন স্টোরে অত্যন্ত নিম্ন মানের পোকা খাওয়া ও পচা চাল বিতরণ করা হয়। যা অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর এবং খাওয়ার অনুপযোগী। ওই চাল সবাই সেখানেই বিক্রি করে দিচ্ছে বলে রিসাইক্লিং হচ্ছে বার বার। এতে পুরনো চালই রয়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর। সরকার চালের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ দিলেও অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে চালের সরবরাহকারী ও আড়তদার পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে এ অনিয়ম চলে আসছে। এ অনিয়ম সম্পর্কে জেনেও যেন নীরব ভূমিকা পালন করছে সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে দুদকের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এর আগেও পুলিশের কনস্টেবল পর্যায়ের বেশ কয়েকজনের অভিযোগ দুদকে জমা হয়।

পুলিশের মিডিয়া উইংয়ের এআইজি সোহেল রানা বলেন, রেশনের খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ কিংবা বিতরণের দায়িত্ব পালন করে খাদ্য অধিদপ্তর। তাদের মাধ্যমেই দরপত্র আহ্বান ও রেশনের পণ্য বিতরণ হয়। সরবরাহকৃত চাল আমি নিজে খাওয়ার চেষ্টা করে পারিনি। মান আসলেই অত্যন্ত খারাপ। এ বিষয়ে বারবার অভিযোগ করেও কোনো লাভ হয়নি। তিনি আরো বলেন, অধিকাংশ ব্যক্তিই চাল নিয়ে তা আবার খুবই অল্প টাকায় বিক্রি করে চলে যান। ফলে ঘুরেফিরে রেশনপ্রাপ্তদের ভাগ্যে একই চাল জুটে। প্রকৃত অর্থে আমরাও এ অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও প্রতিকার চাই।

সম্প্রতি পুলিশের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হয়, এর মধ্যে রেশন সুবিধাও রয়েছে। দুদকসহ বেশ কয়েকটি সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও এ সুবিধা পাচ্ছেন। রেশন পণ্যের মধ্যে রয়েছে চাল, ডাল, আটা, চিনি ও ভোজ্য তেল। এই পাঁচ পণ্যের মধ্যে চারটি নিয়ে তেমন বড় অভিযোগ না থাকলেও চাল নিয়ে বেশ অসন্তুষ্টি রয়েছ। গন্ধযুক্ত ও নিম্ন মানের রেশনের চাল নিয়ে তারা ক্ষুব্ধ।

Facebook Comments Box