খামিছ (বৃহস্পতিবার), ০২ মে ২০২৪

কাশ্মীর সংকট নিরসনে বঙ্গবন্ধুর উপদেশ

কাশ্মীর সংকট নিরসনে বঙ্গবন্ধু

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন: ‘গণতন্ত্রে বিশ্বাসী ভারত, গণতন্ত্রের পথে যেতে রাজি হয় না কেন? কারণ তারা জানে গণভোটের মাধ্যমে কাশ্মীরের জনগণের মতামত নিলে ভারতের পক্ষে কাশ্মীরের লোক ভোট দেবে না।তাই জুলুম করেই দখল রাখতে হবে।’

মুসলমানদের ভূস্বর্গ হিসেবে পরিচিত কাশ্মীর সংকট কয়েক দশকের পুরনো। ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর থেকেই কাশ্মীর সমস্যা শুরু হয়।
প্রতিবেশী দুই দেশ ভারত-পাকিস্তান উভয়ই কাশ্মীরকে দখল করতে চেয়েছিল। কাশ্মীরের একটি অংশের দখল নেয় পাকিস্তান। আরেকটি অংশ তথা কাশ্মীর ও জম্মুর দখল নেয় ভারত। পাকিস্তানের সঙ্গে কাশ্মীরের যে অংশ যুক্ত রয়েছে, সেটি আজাদ কাশ্মীর হিসেবে পরিচিত। এ দুই কাশ্মীরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংকট ভারত শাসিত কাশ্মীর ঘিরেই।

কাশ্মীর সংকট নিরসনে যুগে যুগে বহু মনীষী ও রাষ্ট্রনায়ক নিজের চিন্তা ও পরামর্শ দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও কাশ্মীর সংকট সমাধানে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর জীবনীগ্রন্থ ‘কারাগারের রোজনামচা’য় বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।

কাশ্মীর নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘অত্যাচার আর গুলি করতে ভারত – পাকিস্তান কেহ কম নয়। গুলি করে বা গ্রেফতার করে সমস্যার সমাধান করা কখনোই সম্ভব নয়। ভারতের উচিত ছিল গণভোটের মাধ্যমে কাশ্মীরের জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার মেনে নিয়ে দুদেশের মধ্যে একটি স্থায়ী শান্তি চুক্তি করে নেয়া।’

এই সংকটের সমাধানে বঙ্গবন্ধুর পরামর্শ ছিল, ‘পাকিস্তান ও ভারত সামরিক খাতে অর্থ ব্যয় না করে দুই দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য অর্থ ব্যয় করা। দুদেশের জনগণও উপকৃত হত। ভারত যখন গণতন্ত্রের পূজারি বলে নিজকে মনে করে তখন কাশ্মীরের জনগণের মতামত নিতে কেন আপত্তি করছে? এতে একদিন দুটি দেশই এক ভয়াবহ বিপদের সম্মুখীন হতে বাধ্য হবে।’

জম্মু-কাশ্মীরের জনমতকে উপেক্ষা করায় ভারতের সমালোচনা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আরও বলেছিলেন, ‘গণতন্ত্রে বিশ্বাসী ভারত, গণতন্ত্রের পথে যেতে রাজি হয় না কেন? কারণ তারা জানে গণভোটের মাধ্যমে কাশ্মীরের জনগণের মতামত নিলে ভারতের পক্ষে কাশ্মীরের লোক ভোট দেবে না। তাই জুলুম করেই দখল রাখতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দুদেশের সরকার কাশ্মীরের একটি শান্তিপূর্ণ ফয়সালা না করে দুই দেশের জনগণের ক্ষতিই করছেন। দুদেশের মধ্যে শান্তি কায়েম হলে, সামরিক বিভাগে বেশি টাকা খরচ না করে দেশের উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় করা যেত। তাতে দুই দেশের জনগণই উপকৃত হতো। আমার মনে হয়, ভারতের একগুঁয়েমিই দায়ী শান্তি না হওয়ার জন্য।’

গত ৫ আগস্ট কাশ্মীর জনগণের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে হিন্দুত্ববাদী ভারত সরকার বঙ্গবন্ধুর প্রত্যেকটি কথার সত্যতা প্রমান করেছে।

তথ্যসূত্র: কারাগারের রোজনামচা

Facebook Comments Box