খামিছ (বৃহস্পতিবার), ২৮ মার্চ ২০২৪

কাশ্মীরে তীব্র আতঙ্ক: মেহবুবা মুফতি, ওমর আবদুল্লাহ গৃহবন্দী

কাশ্মীরে তীব্র আতঙ্ক: মেহবুবা মুফতি, ওমর আবদুল্লাহ গৃহবন্দী

সরকারী সূত্রে খবর, জম্মু ও কাশ্মীরের তিন শীর্ষস্থানীয় নেত্রী ওমর আবদুল্লাহ, মেহবুবা মুফতি এবং সাজ্জাদ লোনকে গৃহবন্দী করা হয়েছে। সরকারী পরামর্শদাতারা হজযাত্রীদের এবং পর্যটকদের একটি বিশাল নিরাপত্তা ব্যবস্থা অবিলম্বে উপত্যকা ত্যাগ করার অনুরোধ করার পরে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে একটি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে কাশ্মীর উপত্যকা জুড়ে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে। স্কুল ও কলেজগুলিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের হোস্টেল খালি করার নির্দেশনা দিয়েছিল।

“আমি বিশ্বাস করি আমাকে আজ মধ্যরাত থেকে গৃহবন্দী করা হচ্ছে এবং অন্য মূলধারার নেতাদের জন্য ইতিমধ্যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এটি সত্য কিনা তা জানার উপায় নেই তবে যদি হয় তবে আমি আপনাদের সবাইকে অন্যদিকে দেখতে পাব। ওমর আবদুল্লাহ টুইট করেছেন, যা কিছু স্টোরের মধ্যে রয়েছে। আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সূত্রগুলি বলছে, পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি) নেতা মেহবুবা মুফতি এবং পিপলস কনফারেন্সের নেতা সাজ্জাদ লোনকেও স্থান দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। কংগ্রেস নেতা উসমান মজিদ এবং বামদের এমওয়াই তড়িগামি জানিয়েছেন, তাদেরও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গত বাহাত্তর ঘন্টা বা তারও বেশি সময় ধরে ভারত-শাসিত কাশ্মীরের শ্রীনগর উপত্যকা বা ‘ভ্যালি’ বলে পরিচিত অঞ্চলটিতে যে ধরনের থমথমে উত্তেজনা আর আতঙ্ক বিরাজ করছে, তা কাশ্মীরের স্ট্যান্ডার্ডেও রীতিমতো নজিরবিহীন।

ভ্যালিতে বাড়তি পঞ্চাশ হাজার সেনা ঠিক কী করতে আনা হল, কেন অমরনাথ তীর্থযাত্রীদের বা গুলমার্গ-পহেলগাম থেকে পর্যটকদের হুড়োহুড়ি করে ফেরত পাঠানো হল – এইসব প্রশ্নকে ঘিরে উত্তাল হয়ে রয়েছে কাশ্মীরের জনমন।

ভারত-শাসিত কাশ্মীরে ঠিক কী ঘটতে যাচ্ছে, তা নিয়ে তীব্র জল্পনার মধ্যেই দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আজ ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও গোয়েন্দা প্রধানদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেছেন।

দিল্লিতে ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড কনফ্লিক্ট স্টাডিজের কর্ণধার ও সাবেক মেজর জেনারেল দীপঙ্কর ব্যানার্জিও বিশ্বাস করেন, “কাশ্মীরে অবশ্যই বড় কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে – যদিও সেটা ঠিক কী এখনও জানা নেই।”

“নইলে এত বাড়তি সেনা সেখানে নিয়ে যাওয়া বা উচ্চ-পর্যায়ে এমন জরুরি বৈঠকের দরকার পড়ত না।”

“হয়তো বড় কোনও হামলার খুব বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য আছে, সেই জন্যই তীর্থযাত্রীদের এভাবে সরানো হল। কাশ্মীরে কোর কমান্ডারের কথাতেও সেই ইঙ্গিত মিলেছে।”

ফলে কাশ্মীর ভ্যালির প্রায় সত্তর লক্ষ মানুষ এখন দিন কাটাচ্ছেন চরম এক অনিশ্চয়তা আর অজানা আতঙ্কেই।

Facebook Comments Box