আহাদ (রবিবার), ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বাংলা নববর্ষ পালন নিয়ে পবিত্র দ্বীন ইসলাম সম্পর্কে মনগড়া ব্যাখ্যা দেয়ায় মসজিদের খতিবকে লিগ্যাল নোটিশ

বাংলা নববর্ষ পালন করাকে ইসলামসম্মত বলায় ধানমন্ডির তাকওয়া মসজিদের খতিব মুফতি উসামা ইসলামকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন মোহাম্মদপুরের তাজ জামে মসজিদের সম্মানিত খতীব মুফতিয়ে আ’যম আবুল খায়ের মুহম্মদ আযীযুল্লাহ। বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট মুহম্মদ হাসান শহীদ কামরুজ্জামান (দুর্বার)-এর মাধ্যমে এই লিগ্যাল নোটিশটি আজ রেজিস্টার্ড ডাকে পাঠানো হয়েছে।

গত ১৩ এপ্রিল ২০১৮, শুক্রবারে প্রকাশিত দৈনিক “বাংলাদেশ প্রতিদিন” পত্রিকার প্রিন্ট সংস্করণ ও অনলাইন সংস্করণে “পবিত্র শবে মেরাজ ও পয়লা বৈশাখ” শীর্ষক একটি নিবন্ধে তাকওয়া মসজিদের খতিব মুফতি উসামা ইসলাম লিখেছিলেন: “পয়লা বৈশাখ বাঙালির প্রাণের উৎসব। বাংলাভাষী মানুষের সিংহভাগ যেহেতু মসুলমান সেহেতু এ উৎসব থেকে তাদের দূরে থাকার সুযোগ নেই। বাংলা নববর্ষকে কেন্দ্র করে শরিয়তের বৈধ সীমায় আনন্দ-উৎসব করা দোষের নয়। বৈধভাবে নববর্ষ উদ্যাপনের অনেক পথও রয়েছে। শুকরিয়ার নামাজ, দান-সদকা, নফল রোজা, কোরআন তিলাওয়াত ও দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে নববর্ষ উদ্‌যাপন করা যেতে পারে।”

এই বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে মোহাম্মদপুরের তাজ জামে মসজিদের সম্মানিত খতীব মুফতিয়ে আ’যম আবুল খায়ের মুহম্মদ আযীযুল্লাহ সাহেবের পাঠানো লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়েছে যে, বাংলা সনের প্রতিটি মাসের নামই প্রাচীন হিন্দু বর্ষপঞ্জী থেকে গ্রহণ করা হয়েছে এবং পহেলা বৈশাখ উদযাপনকেন্দ্রিক উৎসবগুলোরও উৎস সুস্পষ্টভাবে বহু দেব-দেবী কেন্দ্রীক চিন্তা আশ্রিত হিন্দু ধর্ম। যার সাথে পবিত্র দ্বীন ইসলামের রয়েছে সুস্পষ্ট বিরোধ। অথচ আপনি নোটিশগ্রহীতা, একজন “মুফতি” হওয়া সত্ত্বেও, উল্লেখিত নিবন্ধে লিখেছেন: “চলতি বছর দুটি দিন আমাদের সামনে হাজির হয়েছে একই সময়ে। এর একটি হলো পবিত্র শবে মেরাজ অন্যটি বাংলা নববর্ষের পয়লা বৈশাখ। এ দুটি দিনের সঙ্গে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সম্পর্ক রয়েছে।”- এ বক্তব্যের স্বপক্ষে আপনি কোন দলিল-আদিল্লা উল্লেখ ছাড়াই খেয়ালীপনার বশবর্তী হয়ে হীন চিন্তার প্রকাশ ঘটিয়ে মুসলমানগণের অন্তরাত্মায় আঘাত দিয়েছেন। যা পবিত্র দ্বীন ইসলামের প্রকাশ্য অবমাননা এবং তুচ্ছ তাচ্ছিল্লের সামিল।

লিগ্যাল নোটিশে আরও বলা হয়, কথিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন যেহেতু হিন্দুদের ধর্মীয় রীতি, সেহেতু এই ঘৃণ্য উৎসবের দিনের সাথে পবিত্র দ্বীন ইসলামের “নামাজ, দান-সদকা, নফল রোজা, কোরআন তিলাওয়াত ও দোয়া মাহফিলের” মতো পবিত্র ইবাদতসমূহকে সম্পর্কযুক্ত করে নোটিশগৃহীতা মুসলমানগণের পবিত্র দ্বীনি অনুভূতিতে আঘাত করেছেন। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের পবিত্র দ্বীন ও হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে মুফতি উসামার শরীয়াতের দলীলহীন মনগড়া মন্তব্য বাংলাদেশে প্রচলিত দণ্ডবিধির ২৯৫(ক) ধারা এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬-এর ৫৭ ধারা মোতাবেক শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

ওই নোটিশ পাওয়ার সাত কার্যদিবসের মধ্যে মুফতি উসামাকে তার মতামতসমূহের ব্যাপারে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীস শরীফ থেকে সুস্পষ্ট দলীল দেখাতে বলা হয়েছে অথবা ওই নিবন্ধে প্রদত্ত বক্তব্য প্রত্যাহার করে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করতে আহবান জানানো হয়েছে। অন্যথায় মুফতি উসামার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানানো হয়েছে লিগ্যাল নোটিশে।

Facebook Comments Box