ছুলাছা (মঙ্গলবার), ১৬ এপ্রিল ২০২৪

সিরাজগঞ্জে ৮৫ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত

সিরাজগঞ্জে ৮৫ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত

নিউজ ডেস্ক : চলতি বন্যা ও নদীভাঙনে গত তিন সপ্তাহে সিরাজগঞ্জের ৪০৮ গ্রামের ৮৫ হাজার ৫৫০টি পরিবার বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৩ হাজার ৭৯ পরিবার সম্পূর্ণ ও ৮২ হাজার ৪৭১টি পরিবার আংশিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) দুপুরে জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এ বন্যায় ১৫ হাজার ৪৩৪ জন সম্পূর্ণ ও ৩ লাখ ১৩ হাজার ৯৯৭ জন মানুষ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও বন্যার পানিতে পড়ে মারা গেছে ৫ জন।

তথ্যসূত্রে আরও জানা যায়, জেলার ৫টি উপজেলার ৪১টি ইউনিয়ন বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। উপজেলাগুলো হ৬লো কাজিপুর, সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর। এর মধ্যে কাজিপুর ও চৌহালীতে ক্ষতির পরিমাণ বেশি। এছাড়া সদর ও শাহজাদপুরেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হয়েছে। এসব এলাকার বাঁধ, রাস্তাঘাট, ধ্বংস এবং জমির ফসলও নষ্ট হয়ে গেছে।

ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ির সংখ্যা মোট ৫০ হাজার ৫১৮টি। এর মধ্যে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত ৬ হাজার ৫০৫ এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ৪৪ হাজার ১৩টি। বন্যার পানিতে ডুবে ও বিভিন্ন রোগে মারা গেছে ৪টি গবাদি পশু ও ৩ হাজার ৮৮৫টি হাস-মুরগী। ৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে, আংশিক ক্ষতি হয়েছে আরও ২৫৬টি শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের।
৫৫.৩৪ কিলোমিটার পাকা ও কাঁচা সড়ক সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। আংশিক নষ্ট হয়েছে আরও ১৮০ কিলোমিটার সড়কের। অধিকাংশ কাঁচা ও পাকা রাস্তা এখনো বন্যার পানিতে নিমজ্জিত। এসব সড়কের ২৯টি ব্রিজ ও কালভার্টও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, কাজিপুর ও শাহজাদপুরে দু’টি বাঁধের প্রায় ২ কিলোমিটার আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এদিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার ২১ হাজার হেক্টর জমির ফসল বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়। প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল সম্পূর্ণ ও আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ডিডি) হাবিবুর রহমান জানান, চলতি বন্যায় রোপা আমনের বীজতলা, আগাম রোপা আমন, আউশ, বোনা আমন গ্রীষ্মকালীন শাক-সবজি, আখ, ভুট্টা ও কলা বাগানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলায় প্রায় ১৪৩ কোটি টাকার ফসল নষ্ট হয়েছে বলে তিনি জানান।

সিরাজগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. বদরুজ্জোহা জানান, বন্যার পানিতে এখনো অনেক সড়ক ডুবে রয়েছে। তাই ক্ষয়-ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নিরূপন করা হয়নি। তবে প্রাথমিকভাবে ৫০ কিলোমিটারের বেশি রাস্তা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে বলে জানান তিনি।

জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহম্মেদ জানান, যমুনার পানি কমতে শুরু করেছে। পাশাপাশি বন্যার পানিও নামতে শুরু করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি ও পরিবারের তালিকা প্রস্তুত করে তাদের পুনর্বাসনের জন্য সরকারের কাছে আবেদনের প্রক্রিয়া চলছে।

Facebook Comments Box