খামিছ (বৃহস্পতিবার), ২৮ মার্চ ২০২৪

নদীতে পানি বাড়ছে দুই অঞ্চলেরঃ ১০ জেলায় বন্যার আশঙ্কা

নদীতে পানি বাড়ছে দুই অঞ্চলেরঃ ১০ জেলায় বন্যার আশঙ্কা

নিউজ ডেস্ক : দেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের নদ-নদীর পানি বাড়ছে। ভারতের পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্যে অতিবৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢলের পানি নেমে আসায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে দেশের ভেতরে বৃষ্টির পানি। এ কারণে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, তিস্তা, ধরলা এবং সুরমা-কুশিয়ারাসহ উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের নদ-নদীতে পানিপ্রবাহ বেড়েছে।

ইতিমধ্যে বেশকিছু জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। চলতি মাসের শেষের দিকে নদীগুলো বিপদসীমা পার করতে পারে। তখন উল্লিখিত দুই অঞ্চলের অন্তত ১০টি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

সোমবার সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (এফএফডব্লিউসি) পৃথক দুই বুলেটিনে জানিয়েছে, উত্তরাঞ্চলের ৮ জেলা ২৭ জুনের পর বন্যাকবলিত হতে পারে।
এগুলো হচ্ছে- কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ ও পাবনা। এছাড়া সিলেট ও সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চলেও বন্যা দেখা দিতে পারে।

বাংলাদেশের বন্যা অববাহিকাকেন্দ্রিক বিবেচনা করা হয়। উল্লিখিত দুই অঞ্চলের মধ্যে উত্তরের জেলাগুলো ব্রহ্মপুত্র-যমুনা আর পূর্বাঞ্চলের জেলা মেঘনা অববাহিকাভুক্ত।
এফএফডব্লিউসি বলছে, ভারতের অরুনাচল, আসাম, পশ্চিমবঙ্গ ও মেঘালয়ের উপরে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় হয়েছে। এর প্রভাবে ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে এসব রাজ্যে। এসব রাজ্যের পানি কিছুটা তিস্তা-ধরলা হয়ে ব্রহ্মপুত্রে আসে। বাকিটা সরাসরি ব্রহ্মপুত্রে আসে। ব্রহ্মপুত্র নদীর নামই বাংলাদেশে যমুনা। এ নদীতে ২৪ জুন থেকে পরের দশদিন পানিপ্রবাহ বাড়বে। এতে স্বল্প থেকে মধ্যমেয়াদি বন্যা হতে পারে। এ নদীর পানিই এসে যুক্ত হয় পদ্মায়। ফলে উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে ১০ দিন পর পদ্মা পাড়ের জেলা রাজবাড়ি, মাদারীপুর, মুন্সিগঞ্জ ও শরীয়তপুরে বন্যার সৃষ্টি করতে পারে।

অন্যদিকে ভারতের রাজ্যগুলো থেকে আসা পানি পূর্বাঞ্চলের সারিগোয়াইন, যদুকাটা, সোমেশ্বরী, ভূগাই, কংস, মনু ও খোয়াই হয়ে সুরমা-কুশিয়ারায় প্রবাহিত হয়।

এ পানি পরে ভৈরববাজারে মিলিত হয় মেঘনায়। মেঘনার নিম্নাংশে এ পানি খুব একটা বন্যার সৃষ্টি করে না। কিন্তু সুরমা-কুশিয়ারা এবং এর উপরের উল্লিখিত নদীগুলো সুনামগঞ্জ ও সিলেটে বন্যা সৃষ্টি করতে পারে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের (এফএফডব্লিউসি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া শুক্রবার  জানান, মনে হচ্ছে চলতি মাসের শেষে এবং জুলাইয়ের শুরু পর্যন্ত স্বল্প থেকে মাঝারি আকারের বন্যা হতে পারে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা এবং মেঘনা অববাহিকায় উপরের অংশে বা সিলেট অঞ্চলে।

বন্যার কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে এ প্রকৌশলী বলেন, মে মাসে বড় দুটি ঘূর্ণিঝড় হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট আম্পান আর আরব সাগরে সৃষ্ট নিসর্গের কারণে প্রচুর বৃষ্টি পেয়েছে বাংলাদেশ ও ভারত।

ভারতের পূর্বাঞ্চলের বেশ কয়েকটি রাজ্যের বানের পানি প্রবাহিত হয় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা এবং মেঘনা অববাহিকায়, যা বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে বঙ্গোপসাগরে চলে যায়। এ পানিই যখন নদীর বিপদসীমা পার হয় তখন তা দু’কূল ছাপিয়ে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি করে।

Facebook Comments Box