খামিছ (বৃহস্পতিবার), ২৫ এপ্রিল ২০২৪

দিল্লির উপশহর গুলোতে পঙ্গপালের হানা

দিল্লির উপশহর গুলোতে পঙ্গপালের হানা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের রাজধানী দিল্লিতে ঢুকে পড়েছে ঝাঁকে ঝাঁকে পঙ্গপাল।

শনিবার সকাল থেকে দিল্লির বিভিন্ন এলাকায় লাখ লাখ পঙ্গপাল উড়ছে বলে খবর প্রকাশ করেছে আর্ন্তজাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি। বিবিসি জানিয়েছে, দিল্লি লাগোয়া গুরগাঁওয়ের ওপর দিয়ে পঙ্গপালের ঝাঁক উড়ে যায়।

তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে, দিল্লির আকাশ দিয়ে উত্তরপ্রদেশের দিকে দ্রুত ধেয়ে যাচ্ছে এসব পঙ্গপাল। সেখানে ফসলি জমিগুলো বড়সড় ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।

রাজধানীতে পতঙ্গ ঝাঁকের হানা পড়লে কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দেয়া যাবে তা নিয়ে দিল্লি প্রশাসন জরুরি বৈঠকে বসেছে বলে জানা গেছে।

গুরগাঁওয়ের পাশেই দিল্লির আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। দিল্লির এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল সব বিমানের পাইলটদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে।

বিবিসি জানায়, শনিবার গুরগাঁওয়ের ১৫ তলা ভবনের ওপরেরও উড়ন্ত পঙ্গপাল দেখতে পায় বাসিন্দারা।

বিবিসিকে জয় ভট্টাচার্য নামের এক স্থানীয় জানায়, বেলা সোয়া এগারোটায় হঠাৎই একটানা ঝিঁঝি পোকার ডাকের মতো কিন্তু বেশ জোরালো শব্দ শুনতে পাই। জানলা দিয়ে তাকিয়ে দেখি হাজার হাজার পঙ্গপাল জানলার বাইরেই। তাড়াতাড়ি জানলা, দরজা সব বন্ধ করে দিই। এরপর বন্ধুকে ফোন করে শুনি তাদের এলাকার আকাশও পঙ্গপালে ছেয়ে গেছে। এরপর আগ্রহী হয়ে ফের জানালা খুলে তাকিয়ে দেখি আমাদের বিল্ডিংয়ের ওপরের আকাশটা যেন হলুদ রঙের মেঘে ছেয়ে গেছে।

ভারতের সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছেয়, গুরুগ্রামের সাইবার হাব এলাকায় শুক্রবার বিকাল থেকেই পঙ্গপালের উপদ্রব শুরু হয়। যার কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের দরজা-জানালা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় জেলা প্রশাসন। থালা-বাসন বাজিয়ে পঙ্গপাল তাড়ানোর পরামর্শও দেয়া হয়। কিন্তু রাত পেরিয়ে গেলেও মরু পতঙ্গের দল এলাকা ছেড়ে যায়নি।

এদিকে পঙ্গপালের দলের দৃশ্য ক্যামেরা বন্দী করেছেন অনেক মানুষ আর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছেন তারা।

এসব পতঙ্গের বিষয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পতঙ্গবিজ্ঞানের অধ্যাপক অম্লান দাস বলেন, এই পঙ্গপালের হানাকে প্লেগ বলা হয়। কয়েক দশক পর পর এরা মধ্যপ্রাচ্য থেকে পাকিস্তান হয়ে রাজস্থানে ঢোকে। এবার দিল্লি হয়ে উত্তরপ্রদেশের দিকে যাচ্ছে এরা। মূলত ভূট্টা, গম, ধানের মতো ফসল খেয়ে সাবাড় করে দেয় এরা।

উষ্ণ এবং আর্দ্র অঞ্চলের খোঁজে এসব পতঙ্গ উত্তরপ্রদেশের পর বিহার হয়ে পশ্চিমবঙ্গ পর্যন্ত আসতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি।

তিনি বলেন, গড়ে প্রতিদিন ১০০ কিলোমিটার মতো উড়তে পারে পঙ্গপাল। রাতে এরা উড়ে না। তাই পশ্চিমবঙ্গে হানা দিতে আরও দিন পনেরো লাগতে পারে।

কিন্তু গড়ে ৪০ দিন জীবনায়ু নিয়ে উড়া এসব কীট পশ্চিমবঙ্গ আসার আগেই মারা যাবে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।

এদিকে পঙ্গপালের উপদ্রব থেকে রেহাই পেতে গুজরাট ও রাজস্থানে দরজা জানলা বন্ধ রাখাসহ থালা-বাটি বাজিয়ে শব্দ করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া পতঙ্গনাশক স্প্রে তৈরি করে রেখেছে দুই রাজ্য প্রশাসন।

Facebook Comments Box