খামিছ (বৃহস্পতিবার), ২৮ মার্চ ২০২৪

টানা ষষ্ঠ বছরেও আয় বেড়েছে আওয়ামী লীগের

ষষ্ঠ বছরেও আয় বেড়েছে আওয়ামী লীগের

নিউজ ডেস্ক : আওয়ামী লীগের আয় হয়েছে ২৪ কোটি ২৩ লাখ ৪২ হাজার ৭০৭ টাকা। এর মধ্যে বেশি আয় হয়েছে একাদশ সংসদ নির্বাচনে নমিনেশন ফরম বিক্রি করে। এই ফরম বিক্রিতে আয় হয়েছে ১০ কোটি ৮৮ লাখ ১০ হাজার টাকা। দলটি গত বছর অনুদান পেয়েছে ৭ কোটি ৮৫ লাখ ৮৫ হাজার ৩৫৫ টাকা। আওয়ামী লীগের ২০১৮ সালে ব্যয় হয়েছে ১৮ কোটি ৮৭ লাখ ৮০ হাজার ৫৫৭ টাকা। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে কেন্দ্রীয় কার্যালয় ভবন নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১০ কোটি ৫৬ লাখ ৫৩ হাজার ১০০ টাকা। দলের তহবিলে বর্তমানে ৩৭ কোটি ৫৭ লাখ ৭৮ হাজার ৫৮৭ টাকা অবশিষ্ট রয়েছে।

বুধবার (৩১ জুলাই) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে আওয়ামী লীগের জমা দেওয়া বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমামের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ইসি সচিব আলমগীর হোসেনের কাছে এই হিসাব জমা দেন।

হিসাব জমা দেওয়ার পর মিডিয়া সেন্টারে এইচটি ইমাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘এবার আওয়ামী লীগের আয় হয়েছে ২৪ কোটি ২৩ লাখ ৪২ হাজার ৭০৭ টাকা এবং ব্যয় হয়েছে ১৮ কোটি ৮৭ লাখ ৮০ হাজার ৫৫৭ টাকা। দলের তহবিলে বর্তমানে ৩৭ কোটি ৫৭ লাখ ৭৮ হাজার ৫৮৭ টাকা অবশিষ্ট রয়েছে।’

দলীয় তথ্য মতে, আওয়ামী লীগের মোট আয় ২৪ কোটি ২৩ লাখ ৪২ হাজার ৭০৭ টাকা। আয়ের খাতগুলোর মধ্যে রয়েছে—চাঁদা এক কোটি ৪৫ লাখ ১৯ হাজার ৭০০ টাকা, সদস্য সংগ্রহ/নবায়ন ফরম বিক্রি দুই কোটি ৯ লাখ ৭৭ হাজার ৫২০ টাকা, নমিনেশন ফরম বিক্রি ১০ কোটি ৮৮ লাখ ১০ হাজার টাকা ও অনুদান ৭ কোটি ৮৫ লাখ ৮৫ হাজার ৩৫৫ টাকা। চাঁদার মধ্যে কার্যনির্বাহী সদস্যদের চাঁদা ৩৬ লাখ ৩৬ হাজার টাকা, উপদেষ্টাদের চাঁদা ১০ লাখ ৩৩ হাজার ২০০ টাকা, জাতীয় কমিটির সদস্যদের চাঁদা ৫ লাখ ৩৪ হাজার ৫০০ টাকা, সংসদ সদস্যদের ৭৯ লাখ ২২ হাজার টাকা ও সংরক্ষিত আসনের এমপিদের চাঁদা ১৩ লাখ ৯৪ হাজার টাকা।

এই আয়ের বিপরীতে ২০১৮ সালে দলটির ব্যয় হয়েছে ১৮ কোটি ৮৭ লাখ ৮০ হাজার ৫৫৭ টাকা। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ব্যয়ের খাতগুলো বিস্তারিত জানানো হয়নি। তবে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে ভবন নির্মাণে ১০ কোটি ৫৬ লাখ ৫৩ হাজার ১০০ টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর দলটির স্থিতি ছিল ৩২ কোটি ২২ লাখ ১৬ হাজার ৪৩৭ টাকা। ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এর পরিমাণ বেড়ে ৩৭ কোটি ৫৭ লাখ ৭৮ হাজার ৫৮৭ টাকায় দাঁড়িয়েছে।

এর আগে ২০১৭ সালে আওয়ামী লীগের আয় ছিল ২০ কোটি ২৪ লাখ ৯৬ হাজার ৪৩৬ টাকা, আর ব্যয় ছিল ১৩ কোটি ৬৩ লাখ ৪৮ হাজার ৩১৯ টাকা।

২০১৬ সালের আওয়ামী লীগের আয় হয়েছিল ৪ কোটি ৮৪ লাখ ৩৪ হাজার ৯৭ টাকা, সেই বছর ব্যয় হয়েছিল ৩ কোটি ১ লাখ ৮৪ হাজার ৭৯৯ টাকা এবং স্থিতি ছিল ১ কোটি ৮২ লাখ ৪৯ হাজার ২৯৯ টাকা।

২০১৫ সালে দলটির আয় হয়েছিল ৭ কোটি ১১ লাখ ৬১ হাজার ৩৭৫ টাকা। আর ব্যয় ছিল ৩ কোটি ৭২ লাখ ৮১ হাজার ৪৬৯ টাকা। অর্থাৎ সে সময় দলটি প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত দেখিয়েছিল।

২০১৪ সালে দলটি আয় দেখিয়েছে ৯ কোটি ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪৩ টাকা। আর ব্যয় দেখিয়েছে ৩ কোটি ৪৪ লাখ ৪০ হাজার ৮২১ টাকা। ওই বছর প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত ছিল।

২০১৩ সালে আওয়ামী লীগ আয় দেখিয়েছিল ১২ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আর ব্যয় দেখিয়েছিল ৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এতে প্রায় ৬ কোটি টাকার দলটির উদ্বৃত্ত ছিল।

২০০৮ সালে নিবন্ধন প্রথা চালুর পর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ মেনে নিবন্ধিত দলকে প্রতি পঞ্জিকা বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব পরের বছরের ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ইসিতে জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে, কোনও দল ওই সময়ের আগে ইসিতে আবেদন করে সময় বাড়াতে পারে। এ বছর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি এবং বিরোধী দল জাতীয় পার্টি এরইমধ্যে তাদের হিসাব জমা দিয়েছে।

কোনও দল পরপর তিন বছর আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা না দিলে নির্বাচন কমিশন চাইলে তার নিবন্ধন বাতিল করতে পারে।

Facebook Comments Box