আহাদ (রবিবার), ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫

কোনো নাগরিক যেন অধিকার বঞ্চিত না হয় -প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ২১ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিল। একটি সমাজকে গড়ে তোলার জন্য লক্ষ্য না থাকলে যা হয়, তাই হয়েছিল। এ দেশের কোনো নাগরিক যেন তার অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়। সেজন্য তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাজ করতে হবে।

শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আওয়ামী লীগের দু’দিনব্যাপী কাউন্সিল অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার অবর্তমানে ৮১ সালের একটি কাউন্সিলে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে আমাকে নির্বাচিত করা হয়েছিল। সেই থেকে আমি চেষ্টা করছি, এ দেশের মানুষের অধিকার পূরণের। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি।

দলীয় নেতা-কর্মীদের রাজনীতির মাহাত্ম্য তুলে ধরতে গিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনী থেকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, নীতিবিহীন নেতা নিয়ে অগ্রসর হলে সাময়িকভাবে কিছু ফল পাওয়া যায়। কিন্তু সংগ্রামের সময় তাদের খুঁজে পাওয়া যায় না। এটাই হচ্ছে সব থেকে বড় বাস্তবতা। যেকোনো রাজনৈতিক নেতার জীবনে নীতি-আদর্শ সব থেকে বড়। আর সে আদর্শের জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে সদা প্রস্তুত থাকার কথা। যিনি প্রস্তুত থাকতে পারেন, ত্যাগ স্বীকার করতে পারেন, তিনি সফল হতে পারেন। দেশকে কিছু দিতে পারেন। জাতিকে কিছু দিতে পারেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বাঙালি জাতিকে বিশ্ব দরবারে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা আমাদের রাজনীতি করে যাচ্ছি। তাই আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতা-কর্মীকে আমি এ অনুরোধ করব, আপনাদেরকেও সেই চিন্তা-চেতনা নিয়ে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘দেশে মার্শাল ল, প্রতি রাতে কারফিউ ছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করা হয়েছে। স্বাধীনতা বিরোধীদের ক্ষমতায় আনা হয়েছে। আমার বাবা, মা, ভাই, বোনদের যারা হত্যা করেছে, তাদের বিচারের পথ বন্ধ করে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ৮১ সালে যখন দেশে আসি, তখন সারাদেশ ঘুরে বেড়িয়েছি। দেখেছি মানুষের দুখ দুর্দশা, দলের অবস্থা। দলের মধ্যে ভাঙন হয়েছে। একবার, দুবার। সেই ভাঙন থেকে আবার আমি নতুনভাবে গড়ে তুলেছি। সারা বাংলাদেশে ঘুরেছি। এ সংগঠনকে ধীরে ধীরে গড়ে তুলে আজকে আওয়ামী লীগ এ বাংলাদেশে সব থেকে বড় এবং শক্তিশালী সংগঠন।

বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী সভানেত্রী বলেন, তারা যে সময় ক্ষমতায় ছিল, দুর্নীতিতে বাংলাদেশ পাঁচবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। সন্ত্রাসবাদ, মানি লন্ডারিং, অস্ত্র চোরাকারবারি, সন্ত্রাসী কর্মকা-, বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলা, দুজন সংসদ সদস্য হত্যাকা- ছাড়াও বিভিন্ন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর অত্যাচার করেছে। নির্বাচনের দিন থেকেই শুরু হলো তাদের তা-ব, তাদের অত্যাচার-নির্যাতন।

তিনি বলেন, আমরা দেখেছি, স্বাধীনতাবিরোধী আল বাদর, রাজাকার ও আল শামসসহ যারা এ দেশে মানুষকে হত্যা করেছে, গণহত্যা চালিয়েছে, যারা লুটপাট করেছে, অগ্নি সন্ত্রাস করেছে তাদেরকে নিয়ে বিএনপি এ দেশে সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছিল। তারা ক্ষমতায় থাকলেও সন্ত্রাস করে, বিরোধী থাকলেও সন্ত্রাস করে।

Facebook Comments Box