সাবত (শনিবার), ২০ এপ্রিল ২০২৪

ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়ার বিন্দুমাত্র চেষ্টা হবে বঙ্গবন্ধুর সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা

ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়ার বিন্দুমাত্র চেষ্টা হবে বঙ্গবন্ধুর সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা

নিজস্ব প্রতিবেদক: সন্ত্রাসী ইজরায়েলের সাথে সখ্যতা বনাম বিশ্ব মানবতার নিরব কান্না শিরোনামে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ২য় তলায় রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আন্তর্জাতিক কুদস সপ্তাহ উপলক্ষে শির্ষক সেমিনার করেছে কুদস গ্লোবাল উইক বাংলাদেশ।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়েই ইসরাইল সরকার মুজিবনগর সরকারের সমর্থন নেয়ার চেষ্টা চালায়। তারা নানাবিধ সহযোগীতা দানের চেষ্টা করলেও ফিলিস্তিনের জনগণের ন্যায়ানুগ অধিকারের প্রতি সমর্থন জানিয়ে মুজিবনগর সরকার তা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে। পরবর্তীতে ১৯৭২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ইসরায়েল বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার প্রস্তাব করেছিল। তখনও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর নেতৃত্বাধীন সরকার লিখিতভাবে ইসরায়েলের স্বীকৃতি প্রত্যাখ্যান করে।

১৯৭৩ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময়ও বঙ্গবন্ধু আরব বিশ্বের পক্ষে সমর্থন করেন। এ যুদ্ধে বাংলাদেশ তার সীমিত সাধ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ অবদান রাখার চেষ্টা করেন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সমর্থনে ১ লাখ পাউন্ড চা, ২৮ সদস্যের মেডিকেল টিমসহ একটি স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী পাঠানো হয়। বঙ্গবন্ধুর এ অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ফিলিস্তিনের হেবরন শহরে বঙ্গবন্ধুর নামে একটি রাস্তাও আছে।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের পাসপোর্টে সব সময়েই লেখা থাকতো, ইসরাইল ব্যতিত সকল রাষ্ট্রের এ পাসপোর্ট কার্যকর। কিন্তু হঠাৎ করে ২০২১ সালে বাংলাদেশের ই-পাসপোর্ট থেকে এই কাথাটি বাদ দেয়া হয়েছে। এ ধরনের কার্যক্রমে ফিলিস্তিনের নিপীড়িত জনগণের পক্ষের সমর্থকরা হতবাক হয়েছে। বক্তারা বলেন, “আমরা মনে করি, অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়ার বিন্দুমাত্র চেষ্টা বঙ্গবন্ধুর সাথে বিশ্বাস ঘাতকতার সামিল হবে।”

সেমিনারে বক্তারা আরো বলেন, আজ থেকে ১৪শ’ বছর আগে হিজরী সনের রজব মাসের ২৭ তারিখ আমাদের প্রাণপ্রিয় শেষ নবী হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মিরাজ শরীফে গমণ করেছিলেন। দ্বীন ইসালামের প্রথম কিবলা বায়তুল মুকাদ্দাসের মসজিদুল আকসা থেকেই সেই পবিত্র মিরাজ বা ঊর্ধ্ব ভ্রমণ শুরু হয়েছিলো। এই কারণে রজব মাসের শেষ সপ্তাহকে আন্তর্জাতিক কুদস সপ্তাহ ঘোষণা করা হয়। বক্তারা ২৭শে রজবকে ঐচ্ছিক ছুটির বদলে জাতীয় ছুটি ঘোষণার দাবি জানান। ইতিমোধ্যে কুয়েত ও ওমান ২৭শে রজবকে জাতীয় ছূটি ঘোষণা করেছে বলে তারা উল্লেখ করেন।

সেমিনারে বক্তারা আরো বলেন, বাইতুল মুকাদ্দাস মুসলমানদের তৃতীয় বৃহত্তম ইবদতের স্থান হিসাব হাজার বছর ধরে বিশ্বে সমাদৃত হয়ে আসছে কিন্তু হটাৎ বাংলাদেশে এক শ্রেণির উগ্রপন্থী জেরুজালেমকে হিন্দুদের মন্দির দাবী করে এক সম্প্রদায়িক বিশৃংখলা সৃষ্টির ষড়যন্ত করছে। গত ২৫ জানুয়ারী ২০২২ তারিখে কক্সবাজারের একটি সম্মেলনে জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব এড. গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক জেরুজালেমকে হিন্দুদের মন্দির দাবি করে সেগুলোকে পুনরুদ্ধারের দাবি আহবান জানান। সেমিনারে বক্তারা তার এই বক্তব্যকে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের গভীর ষড়যন্তের অংশ হিসাবে উল্লেখ করে সরকার ও প্রশাসনকে সজাগ হওয়ার আহবান জানান।

বক্তারা মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান বাইতুল মোকাদ্দাসকে ফিলিস্তিনের সম্পদ ও অধিকার মর্মে বাংলাদেশের সকল শিক্ষাকার্যক্রমে ইতিহাস পাঠ্য করার জোর দাবী জানান।
“সন্ত্রাসী ইজরায়েলের সাথে সখ্যতা বনাম বিশ্ব মানবতার নিরব কান্না” শীর্ষক এ সভায় উপস্থিত ছিলেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, গবেষক ও রাষ্ট্রচিন্তক আসাদ পারভেজ, মাওলানা উসমান গনী সালেহী, হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলুল করীম মারুফ,মাওলানা মাহদি হাসান সিদ্দিকী, মাওলানা হোসাইন রেজা, মাওলানা মুহম্মদ সামদানী প্রমুখ।

Facebook Comments Box