জুমুআ (শুক্রবার), ১৯ এপ্রিল ২০২৪

ইডেনের প্রেসবক্সে আসন পেলেন না বাংলাদেশী সংবাদকর্মীরা

কলকাতার ইডেন গার্ডেন্স থেকে: কলকাতার ইডেন গার্ডেন্স স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালের সংবাদ সংগ্রহে এসে আবেদন করেও আসন পেলেন না বাংলাদেশের ১২ সংবাদকর্মী। স্টেডিয়ামের প্রেসবক্সে ঢোকার সুযোগ পেলেও তাদের প্রতিবেদন লিখতে হচ্ছে চেয়ারে সোজা হয়ে বসে পায়ের ওপর ল্যাপটপ-যন্ত্রপাতি রেখে। আর এভাবে কাজ করতে হচ্ছে দুপুর ২টা থেকে। চলবে রাত ১টা পর্যন্ত, প্রায় ১১ ঘণ্টা।

রোববার (৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ ক্রিকেট স্টেডিয়াম ইডেন গার্ডেন্সে শিরোপার লড়াইয়ে মুখোমুখি হচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ড। প্রায় ৬৭ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতার এই স্টেডিয়ামের প্রেসবক্সে সংবাদকর্মীদের বসার আসন টেনেটুনে দেড়শ’। কিন্তু ফাইনালের খবর তৈরির জন্য আবেদন করেছেন ৩৫০ সংবাদকর্মীরও বেশি।

দুপুর ২টায় প্রেসবক্ষে ঢুকে দেখা যায়, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তানের সংবাদকর্মীদের সবাই বসার আসন পেলেও পাননি বাংলাদেশের সবাই। আবেদনকারী ১৬ বাংলাদেশি সংবাদকর্মীর মধ্যে আসন পেয়েছেন মাত্র ৪ জন। বাকি ১২ জনকেই পড়তে হয়েছে বিপাকে।

এই অবস্থায় ফাইনালের খবর তৈরিতে আসা ওই বাংলাদেশি সংবাদকর্মীরা কাজ করছেন চেয়ারে সোজা হয়ে বসে পায়ের ওপরে ল্যাপটপ রেখে।

এক সংবাদকর্মী ক্ষোভ ঝেড়ে তখনই বলে উঠলেন, ‘এভাবে কতোক্ষণ? বিশ্বকাপের ফাইনালের মত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে এভাবে কতোক্ষণ কাজ করা সম্ভব? টানা ৩০ মিনিট কাজ করার পরই তো ব্যথায় পা অবশ হয়ে যায়। ২টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত ১১ ঘণ্টা কি এভাবে সটান থাকা যাবে?’

কয়েকজন সংবাদকর্মী বলেন, এই প্রেসবক্স কেবল প্রতিবেদকদের জন্য হলেও এখানে ম্যাচ ‘উপভোগ’ করতে এসেছেন ভারতের বেশ কিছু গণমাধ্যমকর্মী। তাও অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড নিয়ে।

তারা বলেন, এমন ঠাসাঠাসি করে বসার কারণে চেয়ারে বসা ১২ বাংলাদেশিসহ সংবাদকর্মীদের দারুণ অস্বস্তিতে থেকে কাজ করতে হচ্ছে। চেয়ারগুলো এতোটাই লাগোয়া যে, একটু অসতর্ক হলেই একজনকে আরেকজনের গায়ের ওপর পড়তে হবে।

প্রেসবক্সে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাংলাদেশি ১২ সংবাদকর্মীকে চেয়ারে সটান হয়ে বসতে হলেও বেশ কিছু আসন সন্ধ্যার আগ পর্যন্তও ফাঁকা পড়ে আছে। অ্যাক্রিডিটেড সংবাদকর্মীরা পৌঁছাননি বলে সে আসনগুলো খালি রাখছে কর্তৃপক্ষ। যদিও আইসিসির নিয়মানুযায়ী অনেক আগেই তাদের প্রেসবক্সে প্রবেশের কথা।

এ বিষয়ে বেসরকারি চ্যানেল যমুনা টেলিভিশনের সিনিয়র স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট তাহমিদ অমিত ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সারাবছর যে সংবাদকর্মীরা ক্রিকেটের উন্নয়নে কাজ করতে থাকেন, তারাই ইডেনে এলে হয়ে যান অবহেলার পাত্র!’

রেডিও ধ্বনির স্পোর্টস ব্রডকাস্টার শুভ দেবনাথ বললেন ‘দেশের বাইরে এসে এমন বিড়ম্বনা হতাশাজনক। যারা ক্রিকেট নিয়ে সারাবছর রোদে-পুড়ে বৃষ্টিতে-ভিজে কাজ করে, বিশ্বকাপের মতো আসরে তাদের এ বিড়ম্বনা মানা যায় না। ইডেনের প্রেসবক্সের অবস্থাও খুবই হতাশাজনক।’

Facebook Comments Box