অন্যদিকে এটা দিয়ে কোনও কাজ করা না হলেও গত বছর ৪০ লাখ টাকা ব্যায়ে মেশিনটি মেরামত করতে হয়েছে। খুলনা শিপইয়ার্ড থেকে এটি মেরামত করা হয়।
ড্রেজার মেশিন সম্পর্কে সরকারি অডিট প্রতিবেদনে বলা হয়, ড্রেজার সরবরাহের দু’বছর পার না হতেই এর যন্ত্রাংশসহ ড্রেজারটি মেরামতের প্রয়োজনীয়তাই প্রমাণ করে এটি নিম্নমানের। ড্রেজার মেশিনটি মেরামতের পরও বন্দরের জেটিতেই রাখা আছে।এটা কোনও কাজেই আসছে না। বর্তমানে বিষয়টি নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করছে।
তবে এ ব্যাপারে মংলা বন্দরের প্রধান প্রকৌশলী (নৌ) প্রকল্প পরিচালক আলতাফ হোসেন বলেন, ‘প্রকল্প সময়ে ড্রেজারটি সঠিকভাবেই কেনা হয়েছিল। নেদারল্যান্ডের ড্রেজারটি খুবই উন্নতমানের। ড্রেজারটি আনার পর ৮ ও ৯ নম্বর জেটিতে ড্রেজিং কাজ শুরু করা হয়। কিন্তু পরে প্রকল্প ড্রেজার আসায় বন্দরের ড্রেজারটি সরিয়ে নেওয়া হয়। অডিট টিম ব্যক্তিস্বার্থে আপত্তি তুলেছে। যা অযৌক্তিক।
বন্দরের সদ্য বিদায়ী হারবার মাস্টার কমান্ডার মোহাম্মদ হাসান জানান, বন্দরের জন্য আনা ড্রেজার মেশিনটি চালানোর মত জনবল সঙ্কট রয়েছে। এ কারণে ড্রেজারটি বন্দর জেটিতেই থাকছে। গত বছর এটি খুলনা শিপইয়ার্ডে নিয়ে মেরামত করানো হয়েছে বলে তিনিও স্বীকার করেন।
মংলা বন্দরের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে সরকারি নিরীক্ষা হয় গত বছর। সে সময়ে ২০১১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত অডিট ইন্সপেকশন হয়। ওই ইন্সপেকশন প্রতিবেদনে বলা হয়,‘প্রকিউরমেন্ট অব কাটারসেকশন ড্রেজার উইথ অ্যান্সিলারি ফ্যাসিলিটিজ’ শীর্ষ ৩৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকার প্রকল্পে নিম্নমানের মেশিন ও যন্ত্রাংশ দিয়ে কাজ করায়, প্রকল্পটির উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়েছে। ২০১১ প্রকল্পের নথিপত্র ও আনষাঙ্গিক কাগজপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১১ সালের ৪ মার্চ শুরু হওয়া প্রকল্পে জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ‘ড্রেজার সিডি ইমাম বোখারি’ নামে ড্রেজার মেশিনটি কিনে এবং ২০১২ সালের ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রকল্প কাজ শেষ করা হয়। এরপর দু বছর ড্রেজার মেশিনটি দিয়ে কোনও ড্রেজিং কাজ করা হয়নি। ড্রেজার মেশিনের হাইড্রেলিক ইঞ্জিনের প্রেসার কম থাকার কারণে ড্রেজিং করা সম্ভব নয় বলে জানান অডিট কমিটি। প্রতিবেদনে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি দিয়ে এই ব্যাপারটি তদন্ত করে প্রকল্প প্রধানসহ দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
মেরামতের বিষয়টি স্বীকার করে মংলা বন্দরের প্রধান প্রকৌশলী (নৌ)বলেন, এ ধরনের কাজ যে কোনও সময়েই করা প্রয়োজন হতে পারে।
এদিকে ড্রেজারটি খুলনা শিপইয়ার্ড থেকে মেরামত শেষে ফিরিয়ে নেওয়ার পর কাজে না লাগলেও এটিকে সচল রাখার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ড্রেজারটির ৬টি মেশিন প্রতি মাসে দুইবার পনের মিনিট করে চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ কাজের জন্য প্রতি মাসে পৌনে দু শ’ লিটার তেল খরচ হবে।
এ ব্যাপারে সদ্য বিদায়ী হারবার মাস্টার কমান্ডার হাসান বলেন, বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। কিন্তু শুধুমাত্র মেশিন সচল রাখার জন্য ৬টি মেশিন চালু করা নিয়েও যথেষ্ট আপত্তি রয়েছে। ফলে বিষয়টি নিয়ে অগ্রগতি হয়নি।