হাজারীবাগে এখনো কাজ চালানো ট্যানারির তালিকা চায় হাই কোর্ট
যেসব ট্যানারি কারাখানা এখনো রাজধানীর হাজারীবাগে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে, সেসব প্রতিষ্ঠানে নাম-ঠিকানাসহ তালিকা চেয়েছে হাই কোর্ট।শিল্প সচিবকে তিন সপ্তাহের মধ্যে ওই তালিকা আদালতে দাখিল করতে হবে।
এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম সাহিদুল হকের হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শিল্প মালিকেরা হাজারীবাগে এখনো ট্যানারি কারখানা পরিচালনা করছেন বলে ১১ এপ্রিল পত্রিকায় প্রতিবেদন এসেছে। “তাদের এ কার্যক্রম আদালতের নির্দেশনা অমান্য করার শামিল। ওখানে ট্যানারির কার্যক্রম পরিচালনা করায় ঢাকার পরিবেশ রক্ষা ও বুড়িগঙ্গার দূষণ রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই কার্যক্রম বন্ধে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে আবেদনটি করা হয়।”
ট্যানারি শিল্প হাজারীবাগ থেকে সরিয়ে নিতে হাই কোর্ট ২০০১ সালে একটি রায় দেয়। এরপর ২০০৯ সালের ২৩ জুন আদালত ট্যানারি সরিয়ে নিতে ২০১০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়। পরে সরকারপক্ষের আবেদনে ওই সময়সীমা কয়েক দফা বাড়ানো হয়।
এরপরও ট্যানারি শিল্প হাজারীবাগ থেকে স্থানান্তর না করায় পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ আদালত অবমাননার অভিযোগ আনে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ১৫ এপ্রিল হাই কোর্ট আদালত অবমাননার রুল দেয়। তার জবাবে আদালতে শিল্প সচিব মোশাররফ হোসেন ভুইয়া যে ব্যাখ্যা দেন, তাতে ১০টি প্রতিষ্ঠান বার বার তাগিদ স্বত্ত্বেও কারখানা স্থানান্তরে পদক্ষেপ নেয়নি বলে উঠে আসে। এরপর ওই ১০ কারখানা মালিকের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল দিয়ে তাদের আদালতে তলব করা হয়।
সর্বশেষ গত ১০ ও ১১ এপ্রিল তিন মালিক হাজারীবাগ থেকে কারখানা বন্ধ ও সাভারে সরিয়ে নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়ে অবমাননার দায় থেকে অব্যাহতি পান। তিন মালিক হাজির না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ হয়। বাকি চার মালিকের মধ্যে তিনজন মারা গেছেন। আরেকজন বিদেশে থাকায় তাকে ৩ মে আদালতে হাজিরের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট।
এদিকে ‘হাজারীবাগ ট্যানারিমুক্ত হতে আরও দুই বছর!’ এবং ‘নেতাদের ট্যানারির কাজ এগোয়নি’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে সেগুলো যুক্ত করে ১২ এপ্রিল নতুন এই আবেদন করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ, যা বুধবার শুনানির জন্য ওঠে। আদালতে আবেদনকারী পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়।