সাবত (শনিবার), ২৫ মার্চ ২০২৩

সাত খুন মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবীকে গালি দেওয়ার অভিযোগ

সাত খুনের মামলার শুনানিতে এবার বাদীপক্ষের এক আইনজীবীকে গালাগাল করার অভিযোগ উঠেছে অবসরে পাঠানো র‌্যাবের কর্মকর্তা আরিফ হোসেনের বিরুদ্ধে। একইদিন এ মামলার প্রধান আসামী নূর হোসেনও আকারে-ইঙ্গিতে সাক্ষীদের ‘চুপ’ থাকার হুমকি দেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল ১০টা হতে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে নূর হোসেন, র‌্যাবের চাকরিচ্যুত ও অবসরে পাঠানো সেনা কর্মকর্তা তারেক সাঈদ, আরিফ হোসেন ও এম এম রানাসহ ২৩ আসামির উপস্থিতিতে সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা করা হয়।

সাক্ষ্য গ্রহণের প্রস্তুতির সময়ে পৌনে ১০টায় হঠাৎ করে আরিফ হোসেন বাদীপক্ষের আইনজীবীকে লক্ষ্য করে উচ্চস্বরে বলতে থাকেন ‘ওই সাখাওয়াত’। এরপরেই তিনি গালাগাল শুরু করেন। তখন অন্য সাক্ষীরা হৈচৈ শুরু করলে বিচারক সবাইকে শান্ত করেন।

আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, ‘আদালতে জেরা ও সাক্ষী শুনানির সময়ে আরিফুর রহমান আমাকে গালাগাল করেন। বিষয়টি আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আদালত পরবর্তী শুনানিতে আসামিদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন।’

একইদিন নূর হোসেন সাক্ষীদের ঠোঁটে আঙুল রেখে চুপ থাকার হুমকি দেন। সাক্ষ্য দিতে আসা নিহত নজরুলের ভাই আবদুস সালাম জানান, ‘আমরা যখন সাক্ষ্য দেই তখন নূর হোসেন আকারে-ইঙ্গিতে ঠোঁটে আঙুল রেখে চোখ রাঙিয়ে চুপ করতে বলেন। এ ধরনের আচরণে আমরা কিছুটা আতঙ্কিত।’

নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতের পিপি (পাবলিক প্রসিকিউটর) অ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, সাক্ষীদের নূর হোসেনের হুমকি কিংবা সাখাওয়াতকে গালি দেওয়ার বিষয়টি তার দৃষ্টিগোচর হয়নি। তবে এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকলে  বিষয়টি আদালতে অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

 

সোমবার সাত খুনের ঘটনায় নিহত নজরুলের ভাই আবদুস সালাম, নিহত ইব্রাহিমের ভাই ইউসুফ, নিহত চন্দন সরকারের ভাতিজা অরুণ নাথ পান্না, নিহত জাহাঙ্গীরের ভাই আলমগীর, এস আই আবু তালেব, ইব্রাহিম, নিহত লিটনের ভাই রফিকুল ইসলাম, ফকির চাঁন, ইবনে হাসানের ৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে।

প্রসঙ্গত ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম এবং আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহীম অপহৃত হন। পরে ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের ও ১ মে একজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

তদন্ত শেষে গত বছর ৮ এপ্রিল নূর হোসেন, র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। গত ৮ ফেব্রুয়ারি সাত খুনের দুটি মামলায় নূর হোসেন ও র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

Facebook Comments Box