সাবত (শনিবার), ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

শিল্প-কারখানা চালুর প্রস্তুতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: অঘোষিত লকডাউনে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব দেখা দিয়েছে। স্থবির হয়ে পড়েছে আমদানি-রপ্তানি। এ অবস্থায় দেশের অর্থনীতি বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। দুশ্চিন্তা বাড়ছে ব্যবসায়ীদের।
এ অবস্থায় শিল্প কারখানা চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বেকারত্ব রোধ, দরিদ্রদের কাজের সুযোগ সৃষ্টি ও অর্থনীতির ক্ষতি কমিয়ে আনতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বুধবার একাধিক ব্যবসায়িক সংগঠনের নেতারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

লকডাউনের কারণে রপ্তানি বন্ধ, ব্যাংক ঋণের ইন্টারেস্ট এবং ক্রয় আদেশ বাতিল হওয়াসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে তৈরি পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পোশাক খাতের পণ্য, প্রসাধনী, মুদ্রণ শিল্প, চিকিৎসা সরঞ্জাম, কম্পিউটার ও যন্ত্রাংশ, ইলেকট্রনিক পণ্য, প্লাস্টিক শিল্পসহ দেশের অভ্যন্তরীণ সব ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
চলমান পরিস্থিতিতে দেশের তৈরি পোশাকখাতের এক হাজার ১৪৪টি কারখানায় ৩ দশমিক ১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রফতানি আদেশ বাতিল হয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন কারখানার মালিক ও শ্রমিকরা। রফতানি আদেশ বাতিল হওয়া এসব কারখানায় ২২ লাখ ৭০ হাজারের বেশি শ্রমিক কাজ করেন।

দেশের রপ্তানি খাতের সিংহভাগ তৈরি পোশাকের ওপর নির্ভরশীল। তাই এ খাতের নেতিবাচক প্রভাব পুরো রপ্তানি বাণিজ্যে আঘাত হানবে। তাই লকডাউন তুলে দিয়ে পোশাক কারখানা স্বল্প পরিসরে চালু রাখার দাবি উঠেছে। পোশাক কারখানা চালুর প্রস্তুতিও নিচ্ছে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সিনিয়র সহ সভাপতি ফয়সাল সামাদ বলেন, এই মুহূর্তে আমরা ফ্যাক্টরিগুলোর প্রটোকল ঠিক করছি। এরপর এক্সপোর্টও করতে হবে। বায়াররা যেগুলো অর্ডার করেছে সেগুলো চাচ্ছে। আমরা ফ্যাক্টরি চালু করতে চাই। এক্ষেত্রে আমাদের ফ্যাক্টরিগুলো সার্ভে হচ্ছে।

শুধু পোশাকখাত নয়, চামড়া শিল্পেও ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। লকডাউনের কারণে ৪৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এটি অব্যাহত থাকলে ক্ষতির পরিমাণ কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, কাঁচা চামড়া ২০ থেকে ২৫ বা সর্বোচ্চ একমাস লবণ দিয়ে রাখা যায়। এরপর সেটি ফিনিশিং না করলে নষ্ট হয়ে যায়। তাই আমরা স্বল্প পরিসরে ফ্যাক্টরি চালু করার চিন্তা করছি।
এদিকে, লকডাউনের কারণে ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছেন প্লাষ্টিক ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবসায়ীরা। শুধু আন্তর্জাতিক বাজারে নয়, স্থানীয় বাজারেও এর বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। শত শত শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্লাস্টিক পণ্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিপিজিএমইএ) সভাপতি জসিম উদ্দিন।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের বেশকিছু অর্ডার বাতিল হয়েছে। আবার অনেকের অর্ডার রয়েছে। তাই তারা ফ্যাক্টরি চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, কোরিয়া ও তাইওয়ানে লকডাউনের মধ্যেও ফ্যাক্টরি চালু রয়েছে। দেশের অর্থনীতির স্বার্থে সব ফ্যাক্টরি অল্প পরিসরে হলেও চালু রাখা প্রয়োজন।

Facebook Comments Box