ইসনাইন (সোমবার), ০৪ নভেম্বর ২০২৪

শফিক রেহমানের বাসা থেকে ষড়যন্ত্রের নথি জব্দ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে এবং তার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে যুক্তরাষ্ট্রে অপহরণ ও হত্যা চেষ্টার পরিকল্পনার অভিযোগ সংক্রান্ত বেশ কিছু নথিপত্র জব্দ করা হয়েছে প্রবীণ সাংবাদিক শফিক রেহমানের বাসা থেকে। রিমান্ডে পুলিশকে দেওয়া তথ্যের সূত্র ধরে মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) তার বাসায় গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে এসব নথি উদ্ধার করেছে।

মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম এসব তথ্য জানান। জয়কে হত্যার পরিকল্পনা বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে একাধিক বৈঠকের কথা শফিক রেহমান স্বীকার করেছেন বলেও জানান মনিরুল।

মনিরুল জানান, রিমান্ডে জয়কে হত্যা চেষ্টার পরিকল্পনার বিষয়ে একাধিক বৈঠকে যোগ দেওয়া সংক্রান্ত কিছু নথিপত্র তার বাসায় থাকার কথা জানান শফিক রেহমান। সেই সূত্র ধরেই তার বাসায় অভিযান চালানো হয়েছে। জয়কে হত্যার পরিকল্পনায় যারা অংশ নিয়েছিলেন তারাও যুক্তরাষ্ট্রের বৈঠকগুলোতে উপস্থিত ছিলেন বলে জানিয়েছেন শফিক রেহমান । পল্টন থানায় দায়ের করা মামলাটিতে জয়কে হত্যার ষড়যন্ত্রে বিএনপির হাইকমান্ড যুক্ত রয়েছে বলে উল্লেখ করা আছে। মামলায় হাইকমান্ড বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে মনিরুল জানান, এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে।

সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গত শনিবার প্রবীণ সাংবাদিক শফিক রেহমানকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি পাঁচদিনের রিমান্ডে আছেন। তদন্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রিমান্ডে তিনি ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

মনিরুল জানান, দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সাবেক সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের কাছে ফেডারেল এক্সপ্রেস নামের একটি কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে জয় সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তথ্য উপাত্ত পাঠানো হয়। তার কাছে এ সংক্রান্ত ইমেইলও এসেছিল।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে জয় সম্পর্কে তথ্য ও অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে দলিল সংগ্রহের জন্য ঘুষের ঘটনায় মার্কিন তদন্ত সংস্থা এফবিআই-এর সাবেক স্পেশাল এজেন্ট রবার্ট লাস্টিক, তার বন্ধু জোহান্স থ্যালার ও থ্যালারের পরিচিত রিজভী আহমেদ সিজারকে গোপনীয় ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিষয়ক দলিল এবং তথ্য সংগ্রহের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

রিজভী আহমেদ সিজার বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাস এর সহ-সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনের ছেলে। পরবর্তীতে রিজভী আহমেদ এবং থ্যালার যথাক্রমে ৪২ মাস ও ৩০ মাসের সাজা পান। তাদের আরও দুই বছর নজরদারিতে রাখারও নির্দেশনা দেন আদালত।

মনিরুল জানান, মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনের সঙ্গে শফিক রেহমানের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। মামুনই শফিক রেহমানকে তার ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন। সিজার তাদের কাছে জয়ের গতিবিধি, তার বাসার ঠিকানা, গাড়ির নম্বরসহ অন্যান্য তথ্য সরবরাহ করেছিলেন।

জয়কে হত্যার ষড়যন্ত্রের মামলায় দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সাবেক সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকেও গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তারও রিমান্ড চেয়ে রবিবার আদালতে আবেদন করেছে পুলিশ। আগামী ২৫ এপ্রিল রিমান্ডের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

Facebook Comments Box