খামিছ (বৃহস্পতিবার), ১৬ জানুয়ারি ২০২৫

লেখাপড়া ও কারিগরি প্রশিক্ষণে স্বাবলম্বী হচ্ছে বন্দিরা

লেখাপড়া ও কারিগরি প্রশিক্ষণে স্বাবলম্বী হচ্ছে বন্দিরা

কুষ্টিয়া সংবাদদাতা: কুষ্টিয়া জেলা কারাগারের বন্দিদের জন্য লেখাপড়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তাদেরকে তাত, হস্তশিল্প, পাওয়ার লুম, দর্জি, পুঁথির কাজ, ইলেকট্রিক বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা করেছে জেলা কারাগার।

কারা কর্তপক্ষ জানিয়েছে, এতে বন্দিদের মাঝে পরিবর্তন আসছে। তাদের স্বাবলম্বী করতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে বন্দিদের আলোর পথে নিয়ে আসতে বর্তমান জেল সুপার জাকের হোসেন নানা উদ্যোগ নিয়েছেন। গত দুই বছরে কারাগারে বেশকিছু পরিবর্তনও এনেছেন তিনি।

কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, প্রথমে কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে কয়েকজন শিক্ষক এসে হস্তশিল্প ও পাওয়ার লুমে ওপর প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। এখন কয়েদিরাই হস্তশিল্প ও পাওয়ার লুমে কাজ করেছেন। তারা নিজেরাই শাড়ি ও লুঙ্গি উৎপাদন করছেন। এসব পণ্য কারাগারের সামনে কারা পণ্য প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে বিক্রি করা হচ্ছে। উৎপাদিন পণ্য বিক্রির অর্ধেক অংশ পাচ্ছেন কয়েদিরা।

প্রতিদিন সকালে ইসলামী ফাউন্ডেশন ও কারাগার থেকে পৃথকভাবে পবিত্র কুরআন শরীফ শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে বন্দিদের। বন্দিদের বই পড়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে।

কারা কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, বন্দিদের নিরক্ষরমুক্ত করতে উদ্যেগ নিয়েছে কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে। নতুন কোনও আসামি এলে তার তথ্য সংগ্রহ করা হয়। কেউ লেখাপড়া ও স্বাক্ষর না জানলে তাকে আলাদা ওয়ার্ডে রাখা হয়। কারাগারে আসার পরদিনই শুরু হয় স্বাক্ষর শেখানো। বর্তমান একটি মামলায় যাবজ্জীবন জেল হওয়া উচ্চ শিক্ষিত একজন ব্যক্তি শিক্ষক হিসেবে এখানে কাজ করছেন। এই ব্যক্তি কারাগারে আসার পর থেকে ৯০০ জনকে স্বাক্ষরসহ লেখাপড়া শিখিয়েছেন। ২০১৭ সালে থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত কুষ্টিয়া কারাগারে প্রায় ৩ হাজার ২৮৮ জনকে লেখাপড়া শেখানো হয়েছে।

জেল সুপার জাকের হোসেন বলেন, লেখাপড়া শেখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এখান থেকে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত অনেকেই এখন উপার্জন করে সংসার চালাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, কারাগারকে সংশোধনাগার করতে এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যাতে মাদক ব্যবসায়, ছিনতাই, চুরিসহ নানা অপরাধ করে আসা আসামিরা বের হয়ে সৎ কর্ম করে জীবন যাপন করতে পারেন।

 

 

Facebook Comments Box