বিশ্বব্যাংকের চারটি প্রকল্পে ৩০ কোটি টাকার দুর্নীতি
শীর্ষ নিউজ, ঢাকা : বিশ্বব্যাংকের চারটি প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের এক চিঠিতে এ দুর্নীতির তথ্য তুলে ধরা হয়। এ ধরনের দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে চারটি প্রকল্পের বরাদ্দকৃত ৩০ কোটি টাকা ফেরত চেয়েছে সংস্থাটি।
বিশ্বব্যাংকের এ প্রকল্পগুলোর মধ্যে পানি ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্পে ৩ কোটি ৫ লাখ টাকা, স্বাস্থ্য উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা, জাতীয় কৃষি প্রযুক্তি প্রকল্পে ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, এভিয়ান ইনফ্লুয়েনজা প্রতিরোধ ও প্রতিকার প্রকল্পে ২ কোটি ৮৪ লাখ টাকার দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছেন তারা। সংস্থাটির এক বিশেষ তদন্তে এ দুর্নীতি ধরা পড়ে। তাই এ অর্থ দ্রুত ফেরত দেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সদ্য বিদায়ী আবাসিক প্রতিনিধি ইউ ইয়োহানেস জাট।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকাস্থ কার্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা শীর্ষ নিউজকে বলেন, ০.৭৫ শতাংশ বা তার থেকেও কম সুদে বিশ্বব্যাংক বিভিন্ন প্রকল্পে ঋণ দিয়ে থাকে, কিন্তু এ চার প্রকল্পে বড় অঙ্কের দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়ায় আমরা প্রকল্পগুলোর অর্থ ফেরত নিতে যাচ্ছি।
এ বিষয়ে অর্থনীতি সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সংশ্লিষ্ট উইংয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, এ চার প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের বরাদ্দকৃত অর্থ সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা দুর্নীতি এবং লুটপাট করেছে। এ কারণে বিশ্বব্যাংক তাদের বরাদ্দ ফেরত চেয়েছে।
তিনি বলেন, পরস্পর যোগসাজশে অযোগ্য প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া, ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরি করে অর্থ উত্তোলনসহ পদে পদে দুর্নীতি পেয়েছে। এজন্য অর্থ ফেরত নিতে চায় বিশ্বব্যাংক।
ঋণ চুক্তির সময় এসব প্রকল্পে দুর্নীতির বিষয়ে বিশ্বব্যাংক সতর্ক করে দিয়েছিল বলে জানা যায়, কিন্তু প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এসব সতর্কতা পাত্তা দেননি। তারা সুযোগ পেলেই অর্থ লুটপাট করে পকেটে ঢুকিয়েছে, যার খেসারত সরকারকে দিতে হচ্ছে। তাতে একদিকে যেমন দেশের মর্যাদা হানি হয়েছে, অন্য দিকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলো দেশ।
উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাংকের এ যাবত কালের সবচেয়ে বড় প্রকল্প পদ্মা সেতু, যার নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩০০ কোটি ডলার। এ প্রকল্পে ১২০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রতি দিয়েছিল বিশ্বব্যাংক, কিন্তু পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংক তাদের বরাদ্দ দেওয়া অর্থ ঋণ বাতিল করে।