সাবত (শনিবার), ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বাড়ছে নদী ভাঙন

নদী ভাঙনে দিশেহারা কুড়িগ্রামবাসী

কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা: উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুড়িগ্রামে ধরলা, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বাড়ার পাশাপাশি দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। জেলার উলিপুর, রাজারহাটে তিস্তার ভাঙন এবং রৌমারীতে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে বসতভিটা পাশাপাশি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি। কিন্তু স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, স্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি আরও দুই-তিনদিন অব্যাহত থাকবে, তবে এতে বিপদের কোনও আশঙ্কা নেই।

উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নে তিস্তার ভাঙনে বিলীন হয়েছে বসতবাড়িসহ আবাদি জমি। ওই এলাকায় ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে অর্ধশত বাড়ি, রাস্তাঘাট, মসজিদ, বাজারসহ বেড়িবাঁধ।

ভাঙনে তিস্তার গর্ভে ভিটে হারিয়েছেন ওই ইউনিয়নের শেখের খামার গ্রামের রুহুল আমীন। তিনি জানান, তার বাড়ি থেকে নদী অনেক দূরে ছিল। হঠাৎ গতিপথ পরিবর্তন করে নদী ভাঙন শুরু হয়। এতে তার ভিটেমাটি তিস্তার গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পরে তিনি বাঁধের পাশে বাড়ি করেন।

তিস্তায় ফসলের ক্ষেত হারানো নুরুজ্জামান শেখ বলেন, এবছরও জমিতে বাদাম ও পাট চাষ করেছিলাম। হঠাৎ নদী ভাঙনে আমার প্রায় ২৫ শতাংশ জমি নদীতে চলে গেছে এবং এখনও ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে। শেষ পর্যন্ত এক টুকরা জমিও থাকবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তিনি। থেতরাই ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বলেন, আমরা বরাবরের মতোই কর্তৃপক্ষের কাছে ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অনুরোধ জানিয়ে আসছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনও সাড়া পাইনি।

রৌমারী উপজেলায় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে ভাঙন। গত তিনদিনে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর নতুন গ্রামের অন্তত আটটি বাড়ি ব্রহ্মপুত্র গর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকিতে রয়েছে আরও অন্তত অর্ধশতাধিক পরিবার। ভাঙনের মুখে পড়েছে পাকা সড়ক ও ফৌজদারী-রাজীবপুর বেড়িবাঁধ।

যাদুরচর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আবু সামা জানান, ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে তার ওয়ার্ডের কয়েকটি পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। এছাড়াও অর্ধশত পরিবার ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে। ওই এলাকার কৃষি জমিসহ রাস্তাঘাট নদের ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। দ্রুত ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা না নিলে পুরো গ্রাম ব্রহ্মপুত্রের গ্রাসে বিলীন হয়ে যেতে পারে।

Facebook Comments Box