সাবত (শনিবার), ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

“বাংলাদেশ দরিদ্র দেশ নয় যে, মানুষ অবৈধভাবে ভারতে যাবে”

“বাংলাদেশ দরিদ্র নয় যে, মানুষ অবৈধভাবে ভারতে যাবে”

নিউজ ডেস্ক : সিটিজেনশিপ (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল হয়তো বাংলাদেশের সাথে ভারতের সম্পর্কের উপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে। ১৯৭১ সালের পর বাংলাদেশ থেকে কেউ অবৈধভাবে ভারতে যায়নি, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বারবার বলছে যে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে ‘অনুপ্রবেশকারীরা’ এসেছে এবং বলছে যে, তাদেরকে দেশ থেকে ছুড়ে ফেলা হবে।

এই বিল পাসের একদিন পর বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন তাদের ভারত সফর বাতিল করেছেন।

নিউজ১৮ এর সাথে এক সাক্ষাতকারে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন যে, ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলের ‘আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির’ কারণে সফর বাতিল করেছেন তিনি। তিনি আরো বলেন বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অভিবাসী ভারতে যাওয়ার অভিযোগকে ‘বড় মিথ্যা’ ।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জওয়াবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন ,সিএবি সম্পর্কে আমি অবগত আছি কিন্তু আমি এটা জোর দিয়ে বলতে চাই যে, ১৯৭১ সালের পর বাংলাদেশ থেকে কেউ ভারতে যায়নি। এটা পুরোপুরি ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার এবং আমাদের এখানে কিছু করার নেই। আমি আবার বলছি, সিএবি’র সাথে বাংলাদেশের কোন সম্পর্ক নেই এবং আমরা আশা করি ভারতও এই অবস্থানটা বজায় রাখবে। ভারত আমাদের বন্ধু কিন্তু সিএবির ব্যাপারে পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে আমি বলতে পারি যে, ১৯৭১ সালের পরে বাংলাদেশ থেকে কেউ ভারতে যায়নি। আমি মনে করি না যে, ভারত সরকার তাদেরকে বাংলাদেশে ঠেলে দেবে।

বেশ কিছু বিজেপি নেতা দাবি করেছে যে, বিগত সাত-আট বছরে একটা বড় সংখ্যক বাংলাদেশী ভারতে প্রবেশ করেছে এবং সেখানে বসবাস করছে। তাদের উদ্দেশে আপনি কি বলবেন?

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন এটা একটা বড় মিথ্যা। তারা বিভ্রান্ত হয়েছে। কে কি বলছেন সেটা নিয়ে আমি বিশদে যেতে চাই না। আমি যেটুকু বলতে পারি, সেটা হলো মুক্তিযুদ্ধের আগে, কিছু হিন্দু ভারতে গিয়েছিল, কিন্তু ১৯৭১ সালের পর কোন মুসলিম অবৈধভাবে ভারতে যায়নি। আমি মনে করি কোন গোপন উদ্দেশ্যে ভারত আর আমাদের সম্পর্ক বিনষ্ট করার জন্য বড় ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে।

বাংলাদেশ দরিদ্র দেশ নয় যে, মানুষ অবৈধভাবে ভারতে যাবে। ২০১৮-১৯ সালে আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৮.১৫%। আমাদের বর্তমান জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮.১৩% এবং মাথাপিছু আয় ২০০০ ডলার। আমাকে আপনি বলুন কেন বাংলাদেশ থেকে মানুষ অবৈধভাবে ভারতে যাবে, যেখানে দেশে জীবনযাত্রার মান উন্নত?

পর্যটন, মেডিকেল চিকিৎসা এবং শিক্ষা খাতে বাংলাদেশ কি পরিমাণ ব্যবসা আমরা ভারতকে দিচ্ছি, সেটা জানলে আপনি ধাক্কা খাবেন। এটা সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যকর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য। আমাদের জনগণ ভারতকে ব্যবসায় দিচ্ছে আর তারা অভিযোগ করছে যে, উন্নত জীবনযাত্রার জন্য বাংলাদেশীরা অবৈধভাবে সেখানে যাচ্ছে। আমি তাদেরকে (ভারতীয় রাজনীতিবিদ) অনুরোধ করবো এমন মিথ্যা ছড়াবেন না, যেটা ভারত আর বাংলাদেশের সম্পর্কের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।

Facebook Comments Box