ফোনালাপে আড়ি পেতে সরকার অনৈতিক কাজ করেছে : ডা. জাফরুল্লাহ
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে সাম্প্রতিক ঘটনা ও ফোনে আড়িপাতা প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলন করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও অন্যতম ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। বুধবার বিকেলে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পিএইচএ ভবনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এদিকে গত রবিবার জমির মালিকানা দাবিদারদের সংবাদ সম্মেলনে হামলার অভিযোগে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ ২৩ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ৫০-৬০ জনকে আসামি করে আরও একটি মামলা মামলা দায়ের হয়েছে। এ নিয়ে আশুলিয়া থানায় ডা. জাফরুল্লাহর বিরুদ্ধে মোট ৭টি মামলা দায়ের করা হলো।
সংবাদ সম্মেলনে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় এবং এর সাঙ্গে থাকার কারণেই আমার কোন অপরাধ না পেয়ে আমার গড়া এ সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা মামলা দিয়ে প্রতিষ্ঠনাটির ক্ষতির চেষ্টা করছে একটি অশুভ মহল। অথচ আমি এ প্রতিষ্ঠানটির ট্রাস্টি বোর্ডের ৭ জনের একজন সদস্য মাত্র। আমি এখান থেকে কোন বেতন ভাতা নেই না। কোন জমির মালিকানাও আমার নেই। আমি মারা যাওয়ার পর এ জমিতে আমার কোন কবরও হবে না। তাই আমার জন্য এই প্রতিষ্ঠানটি যেন ধ্বংস না হয়ে যায় সেজন্য সরকারসহ সবার কাছে আহ্বান জানাই।
ফোনে আড়িপাতা প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এটি একটি অনৈতিক কাজ করেছে সরকার। আর কিছু সংবাদ মাধ্যম দায়িত্বশীল না হয়েই এটা প্রকাশ করেছে। আমি আমার সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলতেই পারি। কিন্তু সেটা আড়িপাতা এবং সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ করায় আমার মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে আমি মনে করি। কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে এমন উস্কানিমূলক কোন কথাই আমি বলিনি বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।
তিনি আরো বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নৈতিক দায়িত্ব থেকে ঐক্যফ্রন্টে গিয়েছি। দেশকে ভালবেসে একটি স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরিরই জন্যই এ উদ্যোগ নিয়েছি।
জমির মালিকানা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, যারা এখন জমির মালিকানা দাবি করছেন তারা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ভাবেই জমির মালিকানা দাবি করে দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন। তিনি উল্লেখ করেন, মোহাম্মাদ আলী নামে যিনি জমির মালিকানা দাবি করছেন তিনি আদালতে হেরে গেছেন। আদালত গনস্বাস্থ্যের পক্ষে রায় দিয়েছেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে র্যাবের ভ্রাম্যমান আদালতের যে অভিযান হয়েছে তা উদ্দেশ্যমূলক।
এদিকে আশুলিয়ার মির্জানগর এলাকায় গণস্বাস্থ্যের ভিতরে জমির মালিকানা দাবিদারদের সংবাদ সম্মেলনে হামলার অভিযোগে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহসহ ২৩ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ৫০-৬০ জনকে আসামি করে আরও একটি মামলা মামলা দায়ের হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে জমির মালিকানা দাবিদার ‘কটন টেক্সাটাইল ক্রাফটস লি.’ এর মালিক ভুক্তভোগী কাজী মহিবুর রব বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিজাউল হক দিপু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মারামারি, হামলা ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত রবিবার বিকেলে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের দখলে থাকা জমির মালিকানা দাবি করে পিএইচএ ভবনের মূল ফটকের সামনে সংবাদ সম্মেলন করেন কয়েকজন জমির মালিক। সংবাদ সম্মেলন শেষে জমির মালিকদের পক্ষে কিছু লোক পিএইচএ ভবনের ভিতরে প্রবেশ করতে চাইলে সেখানে দায়িত্বরত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নিরাপত্তা কর্মীরা বাধা প্রদান করেন। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের ১০ ব্যক্তি আহত হয়। এদের মধ্যে জমির মালিকানা দাবিদার কাজী মহিবুর রবের ৫জন লোক গুরুতর আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার জের ধরে তিনি এ মামলাটি দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে।
Facebook Comments Box