প্রশ্ন ফাঁস বন্ধে ব্যর্থতার জন্য শিক্ষামন্ত্রীকে বরখাস্তের দাবি
প্রশ্ন ফাঁস বন্ধে ব্যর্থতার জন্য শিক্ষামন্ত্রীকে বরখাস্তের দাবি জানিয়েছেন সরকারের শরিক জাতীয় পার্টির সাংসদ জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলু।
সোমবার সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অফ অর্ডারে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “আমি দাবি করছি, শিক্ষামন্ত্রী তার ব্যর্থতা, দুর্নীতি, অনিয়ম স্বীকার করে নিয়ে অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। তা না হলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করছি, তাকে বরখাস্ত করে শিক্ষাখাতের উন্নতির জন্য, গুণগুতমান বৃদ্ধির জন্য নতুন মন্ত্রী নিয়োগ করুন।”
গতবছর প্রায় সব ধরনের পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার পর এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের আধা ঘণ্টা আগে কেন্দ্রে প্রবেশের বাধ্যবাধকতা দেওয়াসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে।
তারপরও বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে উত্তরসহ প্রশ্ন ছড়িয়ে পড়ে। পরীক্ষার পর দেখা যায়, মূল প্রশ্নের সঙ্গে তা হুবহু মিলেও গেছে।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য বাবলু বলেন, “প্রতিদিন পত্রিকায় দেখছি প্রশ্নপত্র ফাঁসের খবর। প্রশ্ন ফাঁস মহামারী আকারে বিস্তার লাভ করছে। এটাকে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।”
রোববার সচিবালয়ে এক জরুরি বৈঠকে পর শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসকারীদের ধরিয়ে দিলে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন।
বাবলু বলেন, “আজকেই ‘তুষার শুভ্র’ নামের একটি আইডি থেকে বলা হয়েছে যে তাদের কাছে প্রশ্ন রয়েছে। এটা নিতে হলে এত টাকা দিতে হবে। এ বিষয়টি পত্রিকাতেও এসেছে। তাহলে এটা কেন হচ্ছে?”
আগামী প্রজন্ম সত্যিকার শিক্ষায় শিক্ষিত না হয়ে কেবল ‘সনদধারী’ হয়ে বেড়ে উঠছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা চাকরি পাচ্ছে না মন্তব্য করে জাতীয় পার্টির এই সাংসদ বলেন, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাড়ছে। ছাত্ররা গোল্ডেন জিপিএ পেয়ে বেরিয়ে আসছে, কিন্তু কিছুই পারে না। তারা বাংলাও লিখতে পারে না, ইংরেজিও লিখতে পারে না। এই যদি পরিস্থিতি হয়, তাহলে কার কাছে আমরা দেশটি রেখে যাব!”
সম্প্রতি নাহিদের এক বক্তব্য নিয়ে বিতর্কের প্রসঙ্গ টেনে বাবলু বলেন, “শিক্ষামন্ত্রী কয়েক দিন আগে কর্মকর্তাদের বৈঠকে বলেছেন, ‘আপনারা ঘুষ খান, তবে সহনীয় পর্যায় ঘুষ খাবেন। আমিও ঘুষ খাই, অনেক মন্ত্রী ঘুষ খায়’। এটা বলার পরে কী উনি মন্ত্রী থাকতে পারেন ? যখন মন্ত্রী ঘুষের কথা বলেন তখন তার কথা তো আর কেউ শুনবেন না। তার সচিব শুনবেন না।”
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কঠোর ব্যবস্থা নেবেন বলে আশা প্রকাশ করেন সাংসদ বাবলু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ সময় অধিবেশন কক্ষে উপস্থিত ছিলেন।
জাতির স্বার্থে যা করার, প্রধানমন্ত্রী তা ‘অবশ্যই করবেন’ মন্তব্য করে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, “এ ধরনের একটি বক্তব্য পার্লামেন্টে দিয়ে… যার কোনো রেজাল্ট আনতে পারি না… সে বক্তব্য থেকে নিজেদের নিবৃত রাখাই মনে হয় বাঞ্ছনীয়।”