পুলিশের নতুন চ্যালেঞ্জ কী?
নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘মাদক এখন পুলিশের নতুন চ্যালেঞ্জ’ মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন: ঢাকাসহ সারাদেশকে মাদকমুক্ত করতে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ৪৪তম প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এসময় তিনি বলেন: সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ দমন করে বাংলাদেশ এখন নির্ভরযোগ্য একটা জায়গায় পৌঁছেছে। পুলিশের জন্য এখন নতুন চ্যালেঞ্জ মাদক। মাদকের জন্য জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ঢাকাসহ সারাদেশকে মাদক মুক্ত করতে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।
মন্ত্রী বলেন: বর্তমানে পুলিশ জনবান্ধব পুলিশে রূপান্তরিত হয়েছে। ১০-১৫ বছর আগের পুলিশ আর এখনকার পুলিশ এক নয়। পুলিশ আস্থার প্রতীক হিসেবে মানুষের বিশ্বাসের জায়গাটি দখল করে নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী পুলিশের প্রতি সংবেদনশীল জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন: সরকারের গত ২ মেয়াদে ৮২ হাজার ৩১ জন পুলিশ সদস্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পুলিশকে আধুনিকীকরণ ও উন্নয়নের ধারা চলমান রয়েছে। পুলিশ যদি নিরাপত্তার দায়িত্ব না নেয় তাহলে উন্নয়ন মুখ থুবড়ে পড়বে এমন ভাবনায় প্রধানমন্ত্রী পুলিশকে যথেষ্ট অগ্রাধিকার দেন।
সন্ত্রাস ও মাদক দমনে ডিএমপির সদস্যরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে, যা দেশ-বিদেশে প্রশংসা পেয়েছে।বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন: পুলিশের মূল কাজ হলো মানুষের মনে স্থান করে নেওয়া। মানুষের পুলিশ ভীতি দূর করে আস্থা অর্জন করতে পারলেই আমাদের স্বার্থকতা।
ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন: মহানগরীর ২ কোটি মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডিএমপির ৩৪ হাজার সদস্য আন্তরিকভাবে নিবেদিত। ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল (সিটিটিসি) ইউনিট অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ দমন করে বিনিয়োগের সুন্দর একটা পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।
‘এছাড়া ডিএমপি সদস্যরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইভেন্টে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা মাধ্যমে সফলভাবে ইভেন্ট সম্পন্ন করে আন্তর্জাতিক মহলে সবসময়ই প্রশংসা পেয়েছে’, বলেন ডিএমপি কমিশনার।
এর আগে দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত র্যালি উদ্বোধনের সময় আইজিপি বলেন: থানা হতে হবে সেবার কেন্দ্রবিন্দু। একজন মানুষ নিরুপায় হয়েই থানায় যান। হয়তো তার সব সমস্যার সমাধান নাও দিতে পারেন, কিন্তু তার কথাগুলো মনোযোগ সহকারে শোনেন। কী করতে হবে বুঝিয়ে বলুন, তার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করুন। থানায় এসে হাসিমুখে মানুষ যেন কাঙ্ক্ষিত সেবা পায়। এতে পুলিশের উপর মানুষের বিশ্বাস ও আস্থার জায়গা আরো বাড়বে।
তিনি বলেন: ডিএমপি হচ্ছে পুলিশের আয়না। পুলিশ কী, সেটা ডিএমপিকে দেখলেই বোঝা যায়। ডিএমপির অনেক ভালো কাজের জন্য পুলিশকে আজ মানুষ আপন করে নিয়েছে।
মানুষকে সেবা দেয়া পুলিশের একার পক্ষে সম্ভব হয় নয় উল্লেখ করে আইজিপি বলেন: পুলিশের পাশাপাশি জনগণকেও এগিয়ে আসতে হবে। অপরাধীদের বিষয়ে জনগণ যদি পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করে তবে সেবার মান আরও উন্নত হবে।
এসময় ডিএমপি কমিশনার বলেন: আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আমরা জনবান্ধব পুলিশ গঠন করতে পেরেছি। যার ফলে অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে ঢাকায় অপরাধের মাত্রা অনেক কম।
ডিএমপি’র গোয়েন্দা পুলিশ, বোম ডিসপোজাল ইউনিট (সোয়াট), সাইবার ক্রাইম ইউনিট, কে-নাইন ইউনিট (ডগ স্কোয়াড), কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটসহ ডিএমপির সকল ইউনিট বর্ণাঢ্য এই র্যালিতে অংশ গ্রহণ করে।
র্যালিটি ডিএমপি সদর দপ্তর থেকে শুরু হয়ে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স মাঠে গিয়ে শেষ হয়।এরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল কেক কেটে ডিএমপির ৪৪ তম প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।