পানামা পেপারস: আন্তর্জাতিক সহায়তা চাইলেন পানামার প্রেসিডেন্ট
পানামা পেপারস ফাঁস নিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণে আন্তর্জাতিক সহায়তা চাইলেন পানামার প্রেসিডেন্ট জুয়ান কার্লোস ভারেলা। তিনি বলেছেন, এটা শুধু তার দেশের জন্য সমস্যা বলে তিনি মনে করেন না। তার মতে, এটা আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থার জন্য একটি কেলেঙ্কারি। পানামার আইনী প্রতিষ্ঠান মোসাক ফনসেকার মাধ্যমে বিশ্বের সম্পদশালী, রাষ্ট্রনায়ক, রাজনীতিক, সেলিব্রেটি, ক্রীড়াবিদ সহ বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ সম্পদ গোপন করেছেন অথবা আয়কর ফাঁকি দিয়েছেন। এ তথ্য ফাঁস হওয়ার পর এরই মধ্যে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সিগমুনদুর ডেভিড গানলাউগসন। অভিযোগ আছে তিনি অফসোর কোম্পানিতে গোপনে অর্থ বিনিয়োগ করেছেন। প্রথমদিকে এ অভিযোগ অস্বীকার করলেও তিনি পরে পদত্যাগে বাধ্য হন। ওদিকে গত শুক্রবার পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন স্পেনের শিল্প বিষয়ক মন্ত্রী জোসে ম্যানুয়েল সোরিয়া। অফসোর কোম্পানি থেকে সুবিধা নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। এরপর তার পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে বিরোধীদের পক্ষ থেকে। অফসোর কোম্পানিতে বিনিয়োগের অভিযোগ আছে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ, ভারতের কিংবদন্তি অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন, তার পুত্রবধু ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে। এ ছাড়াও বিশ্বের আরও অনেক নাম এ তালিকায় যুক্ত হয়েছে। এ ইস্যুটি সাম্প্রতিক সময়ে সারা বিশ্বে আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে। গত প্রায় ৪০ বছরে মোসাক ফনসেকা যাদেরকে অর্থ পাচারে সহায়তা করেছে তাদের কমপক্ষে এক কোটি ১৫ লাখ গোপন নথি প্রকাশ হয়ে পড়েছে। ওই নথিতে রয়েছে বাংলাদেশের ২৫ জনের নাম। নথির বাংলাদেশ অংশ আগামী মাসে প্রকাশ হওয়ার কথা রয়েছে। রোববার জাপান সফরে গিয়েছেন পানামার প্রেসিডেন্ট কার্লোস ভারেলা। তিনি সেখানকার রাজধানী টোকিওতে বিনিয়োগকারীদের এক সম্মেলনে বলেন, পানামা পেপারস আসলে পানামা সংক্রান্ত নয়। এটা আয়কর ফাঁকি দেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক একটি সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এটা যেমন আর্থিব ব্যবস্থায় একটি অনিয়ম তেমনি আইনি দিক থেকেও এটা অন্যায়। তিনি বলেন, আয়কর ফাঁসি দেয়ার তথ্য শেয়ার করার ক্ষেত্রে তিনি অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টকে সহযোগিতা করতে আগ্রহী। তিনি বলেন, বিভিন্ন দিক থেকে আমরা এ ক্ষেত্রে আমাদের দরজা উন্মুক্ত রেখেছি। পানামা পেপারস ফাঁস হওয়ার পর পানামাকে ফ্রান্স তার ‘আন কোঅপারেটিভ স্টেস অ্যান্ড টেরিটোরিস’ লিস্টে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। ওই তালিকা থেকে পানামাকে বাদ রাখার আহ্বান জানান তিনি।