পাকিস্তান সফর শেষে ভারতের পথে যুবরাজ সালমান
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তান সফর শেষে ভারতের পথে রওয়ানা হয়েছেন সৌদি যুবরাজ ও দেশটির ‘ডি-ফ্যাক্টো’ নেতা মোহাম্মদ বিন সালমান। পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে সঙ্গে নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলার সময় তিনি পাকিস্তানের ওপর তার বিশ্বাসের কথা বলে ভারতের উদ্দেশে রওয়ানা দেন।
দৈনিক ডনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, চার জাতির এক এশিয়ান সফরে দ্বিতীয় দেশ হিসেবে নয়া দিল্লির উদ্দেশে রওয়ানা দিয়েছেন যুবরাজ সালমান। রোববার সন্ধ্যায় সামরিক যুদ্ধবিমানের প্রহরায় পাকিস্তান পৌঁছান তিনি। প্রায় একদিনের মতো পাকিস্তানে থাকার পর তিনি এখন ভারতের পথে।
যুবরাজ সালমান তার এ সফরে ‘মিত্র’ দেশ হিসেবে পাকিস্তানের আর্থিক অচলাবস্থা কাটাতে দুই হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করার ঘোষণা দেন। তার সফরে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর ছাড়াও সৌদি আরবে দুই হাজারের বেশি বন্দি পাকিস্তানি নাগরিককে মুক্তি দেয়ার কথা জানান তিনি।
কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় ৪৪ সিআরপিএফ সদস্যের প্রাণহানির পর যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের পাকিস্তান সফর পিছিয়ে দেয় সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাছাড়া কাশ্মীরের ওই হামলার ঘটনায় কড়া নিন্দা জানায় সৌদি।
হামলার নিন্দা জানিয়ে সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে ভারতের নেয়া পদক্ষেপে সৌদি আরবের সমর্থন থাকবে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়। একই সঙ্গে হামলায় নিহতদের স্বজনদের প্রতি সমবেদনা ও আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করা হয়।
ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের বৈরিতা ও উত্তেজনা কমাতে সৌদি আরব তাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করতে বদ্ধ পরিকর বলেও দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয়। সোমবার যুবরাজ সালমানের নয়া দিল্লির উদ্দেশে ইসলামাবাদ ছাড়ার আগে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এমন আশ্বাস দেয় সৌদি প্রতিনিধি দল।
পুলওয়ামা হামলাকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী এই দুই দেশের চলমান উত্তেজনার মধ্যে ভারতে নিযুক্ত হাই কমিশনারকে ইসলামাবাদে ডেকে পাঠিয়েছে পাকিস্তান। তাছাড়া সোমবার পুলওয়ামায় ফের বন্দুকযুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর মেজরসহ চার জন নিহত হয়েছেন।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ ফয়সাল টুইটারে দেয়া এক বার্তায় বলেন, আমরা পরামর্শের জন্য ভারতে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাই কমিশনারকে ডেকে পাঠিয়েছি। সোমবার সকালের দিকেই তিনি নয়াদিল্লি ত্যাগ করেন। এর আগে দিল্লিতে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে ভারত।
যুবরাজ সালমানের সফরকে কেন্দ্র করে রাজধানী ইসলামাবাদ ও রাওয়ালপিন্ডিতে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয় পাকিস্তান। ইসলামাদের নূর খান বিমান ঘাঁটিতে বিমান অবতরণের পর বিন সালমানকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
সৌদির আকাশসীমায় যুবরাজের বিমান প্রবেশের পর পাক বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান জেএফ-১৬ এবং থান্ডার জেটএফ-১৭ আকাশপথে নিরাপত্তা দেয়। তাছাড়া যুবরাজের বিমানটিকে পাক নৌ-বাহিনীর যুদ্ধবিমান প্রহরা দিয়ে নূর খান বিমান ঘাঁটিতে নিয়ে যায়।