নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় নিজের মেয়েকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ বাবার বিরুদ্ধে
গত রোববার উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের পাকুন্দা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে জান্নাত নামের ওই শিশুর মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যায় মৃত জান্নাতুলের নানী সাজিয়া বেগম বাদী হয়ে তিন জনকে আসামি করে সোনারগাঁ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ঘটনার পর থেকে বাবা জহিরুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ছেলে না হওয়ায় মেয়েটিকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে মামলায় অভিযোগ করা হলেও পুলিশ বলছে, পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, জামপুর ইউনিয়নের পাকুন্ডা গ্রামের সিকম আলীর ছেলে ইলিকট্রিক মিস্ত্রি জহিরুল ইসলামের সাথে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার কেশেরা গ্রামের আব্দুল মালেকের মেয়ে কুলসুমের বিয়ে হয়।
নয়মাস আগে তাদের একটি মেয়ে হয়। এ নিয়ে জহিরুল স্ত্রী কুলসুমের সঙ্গে অশান্তি শুরু করেন। তিনি কুলসুমকে বলেন যেন মেয়েকে তার বাবার বাড়ি রেখে আসেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কলহ চলছিল।
অভিযোগে বলা হয়, গত রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে জহিরুল ঘরে এসে পরিকল্পিতভাবে ঘুমন্ত জান্নাতুলের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় কুলসুম আগুন থেকে তার সন্তানকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে আহত হন।
জান্নাতকে মেডিকেলে না নিয়ে জহিরুল বাড়িতে কবিরাজি চিকিৎসা করান বলে মামলায় বলা হয়।
জান্নাতের নানি সাজিয়া বেগমের অভিযোগ, ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে তার মেয়ে কুলসুমকে বিয়ে দেন। বিবাহের সময় ৫০ হাজার টাকা যৌতুক হিসেবে দেয় কুলসুমের পরিবার। পরে কয়েক দফায় আরোও ৫০ হাজার টাকা নেন জহিরুল।
“জহিরুল এখন মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে। সে বিভিন্ন সময়ে আমার মেয়ে কুলসুমকে মারধর করে।”
জান্নাতুলের মা কুলসুম অভিযোগ করেন, পেট্রোল ঢেরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর ঘরের ফ্যান চালু করে দেয় পাষণ্ড জহিরুল। তার মেয়েকে আগুন থেকে উদ্ধার করার সময় তাকে ঝাপটে ধরে আটক করে রাখে।
“বিভিন্ন সময়ে সে মাদকাসক্ত হয়ে ঘরে ফিরে আমাকে মারধর করত। আমি আমার মেয়ে হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।”
সোনারগাঁও থানার ওসি মোরশেদ আলম বলেন, এ ঘটনায় অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। শিশুর লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা চলছে।
মেয়ে সন্তান হওয়ায় শিশুটি পেট্রোল ঢেলে হত্যার করা হয়েছে কিনা জিজ্ঞেস করা হলে ওসি বলেন, “পারিবারিক কলহের জের ধরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। জহিরুল মাদকাসক্ত। মামলার অভিযোগে এই বিষয়টি উল্লেখ থাকলেও বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”