ওয়াশিংটন যাচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পম্পেওয়ের সঙ্গে বৈঠক ১০ এপ্রিল
নিউজ ডেস্ক:
ভারতে দ্বিপক্ষীয় সফরের পরে এবার ওয়াশিংটন যাচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন। আশা করা হচ্ছে, আগামী মাসের ১০ তারিখ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওয়ের সঙ্গে তার বৈঠক হবে।
এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বুধবার (৬ মার্চ) বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো। আশা করছি, দ্বিপক্ষীয় সব বিষয় নিয়ে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে আলোচনা হবে।
গত জানুয়ারি মাসে পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক ওয়াশিংটন সফর করেন। এ সময় তিনি হোয়াইট হাউজ, স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও পেন্টাগনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এতে ভবিষ্যতে নতুন কোন খাতে কাজ করা যায় এবং চলমান খাতগুলোতে কীভাবে সহযোগিতা সংহত করা যায় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
নতুন খাতের মধ্যে এক্সক্লুসিভ অর্থনৈতিক অঞ্চল, বিল্ড আইনের অধীনে সহযোগিতা, ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি, মেরিটাইম ও সামরিক সহযোগিতা রয়েছে। এছাড়া চলমান খাতের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি, রোহিঙ্গাসহ অন্যান্য খাতও রয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আশা করছি, এবারের বৈঠকে প্রতিটি বিষয় নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনা হবে।’
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র এশিয়া রিঅ্যাস্যুরেন্স ইনিশিয়েটিভ আইন কার্যকর হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশের মেরিটাইম খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধি করার প্রস্তাব রয়েছে। ওই আইনে বলা হয়েছে, তারা বাংলাদেশ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কাসহ দক্ষিণ এশিয়ার গণতান্ত্রিক অংশীদারদের সঙ্গে মেরিটাইম প্রোগ্রাম বাড়াতে চায়।
বাণিজ্য ও বিনিয়োগ
দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় সাত বিলিয়ন ডলার এবং বাংলাদেশে মোট আসা ১৬ বিলিয়ন ডলারের বিদেশি বিনিয়োগের মধ্যে প্রায় ২৫ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা।
এ বিষয়ে আরেকজন কর্মকতা বলেন, ‘আমরা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়াতে চাই এবং আরও অধিক বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে চাই। এটি আমাদের অন্যতম অগ্রাধিকার। আমরা ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে এক্সক্লুসিভ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রস্তাব দিয়েছি। যেখানে মার্কিন বিনিয়োগকারীরা প্রকল্প করবে।’ তারা এখানে উৎপাদিত পণ্য এদেশে বিক্রি করতে অথবা রফতানি করতে পারবে বলে তিনি জানান।
জ্বালানি
চার বিলিয়ন ডলারের মার্কিন বিনিয়োগের মধ্যে তিন বিলিয়নের বেশি বরাদ্দ জ্বালানি খাতে। এ থেকে বোঝা যায়, এ খাতে তাদের আগ্রহ রয়েছে।
একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের দেশে জ্বালানি খাতে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী হচ্ছে শেভরন। তবে আরও মার্কিন কোম্পানি এখানে বিনিয়োগ করতে চায়। সিমিটার, অক্সিডেন্টাল ও কনোকোফিলিপস এর আগে বাংলাদেশে কাজ করেছে এবং আরও এ ধরনের কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুক সেটি চাই।’
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি একটি মার্কিন জ্বালানি প্রতিনিধি দল ঢাকা সফর করেছে। তারা জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।’
মেরিটাইম ও সামরিক সহযোগিতা
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত বছর বাংলাদেশকে ৪০ মিলিয়ন ডলার সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন এবং এই অর্থ মেরিটাইম খাতে খরচ হবে।
একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘সমুদ্র সীমানাসংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির পরে আমরা যে বিশাল সুমদ্র-অঞ্চল পেয়েছি সেটি রক্ষা করার জন্য এবং সম্পদ আহরণের আমাদের বিদেশি সহযোগিতা প্রয়োজন। এছাড়া সামরিক ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, তথ্য আদান-প্রদান ও অন্যান্য বিষয়ে সহযোগিতা বিদ্যমান আছে।’
ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি
ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি বিষয়ে একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘এই বিষয়ে এখনও বাংলাদেশ কোনও অবস্থান নেয়নি।’
তিনি বলেন, ‘এটি অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিষয়ক হলে আমাদের সংহতি প্রকাশ করতে কোনও সমস্যা নেই।’