ই-পাসপোর্ট তৈরি হবে, ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর
উন্নতমানের নিরাপদ ভ্রমণ দলিল ‘ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট বা ই-পাসপোর্ট’ প্রবর্তনের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এ পাসপোর্ট প্রবর্তিত হলে এ খাতে কোনো জালিয়াতি সম্ভব হবে না।
ঢাকা বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস এবং দেশের ৯টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতরে রোববার (২৪ এপ্রিল) সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভবনগুলোর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। ঢাকা বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস ছাড়াও মানিকগঞ্জ, কুষ্টিয়া, পাবনা, পটুয়াখালী, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও দিনাজপুরে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের নতুন ভবনের উদ্বোধন করেন তিনি।
পাসপোর্ট সেবা সপ্তাহ-২০১৬ উপলক্ষে আয়োজিত এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন সেক্টরকে আরও আধুনিক সেক্টরে পরিণত করতে চাই। আমাদের সরকার পাসপোর্ট সেবাকে জনগণের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দিতে চায়।
পর্যায়ক্রমে সারাদেশে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস স্থাপন করা হবে বলেও জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত এগোচ্ছে। আমরাও তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজ করছি। ভবিষ্যতে পাসপোর্ট সেবা একটি ডিজিটাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দেওয়ার পরিকল্পনা আছে। সব কিছু যেন ডিজিটাল প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায়। ইলেকট্রনিক পাসপোর্টও তৈরি করবো আমরা। এ ধরনের পাসপোর্ট প্রবর্তিত হলে এ খাতে কোনো জালিয়াতি সম্ভব হবে না।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় স্মরণ করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তিনি বলেন, এই যে স্বাধীন-স্বতন্ত্র একটি পাসপোর্ট আমরা এখন পাচ্ছি এট জাতির জনকের ২৪ বছরের সংগ্রামের ফসল। তিনি আমাদের বাংলাদেশ দিয়েছেন, স্বাধীন বাংলাদেশের পাসপোর্ট পেয়েছি আমরা।
বঙ্গবন্ধুর বর্বর হত্যাকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতির জনককে খুনের মধ্য দিয়ে এ দেশে হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু হয়। সেসময় যারা ক্ষমতা দখল করে তারা জনগণের সেবা থেকে দূরে সরে নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু দীর্ঘ ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে আবার জাতির জনকের আদর্শে আওয়ামী লীগ জনগণের সেবায় কাজ শুরু করে।
এসময় প্রধানমন্ত্রী দেশের অগ্রগতিসহ পাসপোর্ট অধিদফতরের উন্নয়নে তার সরকারের নানা পদক্ষেপের ফিরিস্তি তুলে ধরেন। তুলে ধরেন এমআরপি কার্যক্রমেরও বিভিন্ন দিকও।
এমআরপি সাফল্যের জন্য সংশ্লিষ্টদের অভিনন্দনও জানান শেখ হাসিনা।
তবে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, অনেকে আমাদের একটু খুঁত পেলে অনেক বড় করে লেখে। টকশোতে বলে। এমআরপির মতো এতো বড় কাজ করে ফেললাম, কেউ কোনো প্রশংসা করলো না। তারা কেবল খুঁত খোঁজে। অথচ আমরা ভালো কিছু করলে তার কথা বলতে কৃপণতা দেখায়।
প্রধানমন্ত্রী এসময় বলেন, ৯৬ সালে একটা মাত্র টেলিভিশন ছিলো, বাংলাদেশ টেলিভিশন। একটা মাত্র রেডিও ছিলো, বাংলাদেশ রেডিও। এ খাত আমরা সবার জন্য খুলে দিলাম। তারপর এখন সেখানে আমাদেরই সমালোচনা করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। আমরা পারবো। কারণ আমরা যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আমরা বিজয়ী জাতি। বিজয়ী জাতি কখনো মাথা নত করে না। আমরা ইতোমধ্যেই স্বাবলম্বী হয়ে উঠছি। ভবিষ্যতে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবো।